বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত

অবরুদ্ধ গাজার দক্ষিণের শহর খান ইউনিসে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর হামলায় আরও ৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪ শিশুও রয়েছে। এছাড়া ইসরাইলি বাহিনী উত্তর গাজার একটি হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, খান ইউনিসের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে বাড়ি লক্ষ্য করে চালানো ইসরাইলি হামলায় নিহতদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছেন। শুক্রবার সকালে এ ঘটনার পর কিছু বাসিন্দা ধ্বংসাবশেষ থেকে তাদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন। কিছু শিশু তাদের খেলনা উদ্ধারের চেষ্টা করছিল। এদিকে, খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে নিহতদের মধ্যে তিনটি শিশুকে একই সাদা কাফনে মোড়ানো অবস্থায় প্রস্তুত করতে দেখা গেছে। উত্তর গাজার জাবালিয়া শহরের কাছে কামাল আদওয়ান হাসপাতালেও অভিযান চালানো হয়েছে। ইসরাইলি বাহিনী বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে এই এলাকায় সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। হাসপাতালের নার্সিং পরিচালক ঈদ সাব্বাহ জানিয়েছেন, গতরাত থেকে হাসপাতালের চারপাশে ইসরাইলি ট্যাংক এবং বুলডোজার ঘিরে রেখেছিল। তারা আহত ও বাচ্চাদের ওপর ভীতি সৃষ্টি করে গুলি চালায়। কিছুক্ষণ পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর একটি প্রতিনিধিদল এসে ৪০ জন রোগীকে সরিয়ে নেয়। তবে ইসরাইলি বাহিনী আবার ফিরে এসে হাসপাতালের অক্সিজেন স্টোরে হামলা চালায় এবং হাসপাতালটি খালি করার নির্দেশ দেয়। ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা সন্ত্রাসী ও সন্ত্রাসী অবকাঠামোর উপস্থিতির ভিত্তিতে কামাল আদওয়ান হাসপাতাল এলাকায় অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযানের আগে প্রায় ৪৫,০০০ লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল এবং এ এলাকায় হামাসের শতাধিক যোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে বেইত লাহিয়া শহরে ইসরাইলি হামলায় তিনটি বাড়ি ধ্বংস হয়, যাতে ২৫ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চিকিৎসকরা। হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তারা ইসরাইলের পক্ষ থেকে হাসপাতালে রোগীদের সরিয়ে নিতে আদেশ পেলেও রোগীদের রেখে যাওয়ার জন্য তারা আদেশ মানতে রাজি হননি। তাদের মতে, উত্তর গাজায় নতুন অভিযানে গত তিন সপ্তাহে অন্তত ৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, জাবালিয়া এলাকায় আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তাদের দাবি, এ এলাকায় এ পর্যন্ত বহু সন্ত্রাসীকে হত্যা, সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। আলোচনায় গাজায় বন্দি ইসরাইলি ও বিদেশি জিম্মিদের মুক্তি এবং ইসরাইলি কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি চুক্তির বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে হামাসের শীর্ষ আলোচক খালিল আল-হাইয়ার নেতৃত্বে একটি দল বৃহস্পতিবার কায়রো পৌঁছেছে এবং মিশরীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করছে। তাদের দাবি, যেকোনো সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনীকে প্রত্যাহার ও যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, এই সংঘাতের কূটনৈতিক সমাধানের প্রয়োজন রয়েছে এবং লেবানন-ইসরাইল সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে আলোচনা প্রয়োজন। সূত্র: যুগান্তর

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত

প্রকাশিত সময় : ১১:১৯:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

অবরুদ্ধ গাজার দক্ষিণের শহর খান ইউনিসে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর হামলায় আরও ৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪ শিশুও রয়েছে। এছাড়া ইসরাইলি বাহিনী উত্তর গাজার একটি হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, খান ইউনিসের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে বাড়ি লক্ষ্য করে চালানো ইসরাইলি হামলায় নিহতদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছেন। শুক্রবার সকালে এ ঘটনার পর কিছু বাসিন্দা ধ্বংসাবশেষ থেকে তাদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন। কিছু শিশু তাদের খেলনা উদ্ধারের চেষ্টা করছিল। এদিকে, খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে নিহতদের মধ্যে তিনটি শিশুকে একই সাদা কাফনে মোড়ানো অবস্থায় প্রস্তুত করতে দেখা গেছে। উত্তর গাজার জাবালিয়া শহরের কাছে কামাল আদওয়ান হাসপাতালেও অভিযান চালানো হয়েছে। ইসরাইলি বাহিনী বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে এই এলাকায় সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। হাসপাতালের নার্সিং পরিচালক ঈদ সাব্বাহ জানিয়েছেন, গতরাত থেকে হাসপাতালের চারপাশে ইসরাইলি ট্যাংক এবং বুলডোজার ঘিরে রেখেছিল। তারা আহত ও বাচ্চাদের ওপর ভীতি সৃষ্টি করে গুলি চালায়। কিছুক্ষণ পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর একটি প্রতিনিধিদল এসে ৪০ জন রোগীকে সরিয়ে নেয়। তবে ইসরাইলি বাহিনী আবার ফিরে এসে হাসপাতালের অক্সিজেন স্টোরে হামলা চালায় এবং হাসপাতালটি খালি করার নির্দেশ দেয়। ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা সন্ত্রাসী ও সন্ত্রাসী অবকাঠামোর উপস্থিতির ভিত্তিতে কামাল আদওয়ান হাসপাতাল এলাকায় অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযানের আগে প্রায় ৪৫,০০০ লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল এবং এ এলাকায় হামাসের শতাধিক যোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে বেইত লাহিয়া শহরে ইসরাইলি হামলায় তিনটি বাড়ি ধ্বংস হয়, যাতে ২৫ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চিকিৎসকরা। হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তারা ইসরাইলের পক্ষ থেকে হাসপাতালে রোগীদের সরিয়ে নিতে আদেশ পেলেও রোগীদের রেখে যাওয়ার জন্য তারা আদেশ মানতে রাজি হননি। তাদের মতে, উত্তর গাজায় নতুন অভিযানে গত তিন সপ্তাহে অন্তত ৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, জাবালিয়া এলাকায় আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তাদের দাবি, এ এলাকায় এ পর্যন্ত বহু সন্ত্রাসীকে হত্যা, সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। আলোচনায় গাজায় বন্দি ইসরাইলি ও বিদেশি জিম্মিদের মুক্তি এবং ইসরাইলি কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি চুক্তির বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে হামাসের শীর্ষ আলোচক খালিল আল-হাইয়ার নেতৃত্বে একটি দল বৃহস্পতিবার কায়রো পৌঁছেছে এবং মিশরীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করছে। তাদের দাবি, যেকোনো সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনীকে প্রত্যাহার ও যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, এই সংঘাতের কূটনৈতিক সমাধানের প্রয়োজন রয়েছে এবং লেবানন-ইসরাইল সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে আলোচনা প্রয়োজন। সূত্র: যুগান্তর