বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নেপথ্যে কেউ আছে কিনা’ ইকবালকে জিজ্ঞেস করবে পুলিশ

কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় নেপথ্যে কেউ আছে কিনা তা মূল অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনের কাছে জানতে চাইবে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে কক্সবাজার থেকে আটকের পর গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত থেকে তাকে ইকবাল সন্দেহে আটক করা হয়। পরে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে তাকে কুমিল্লা পুলিশ লাইনে আনা হয়।

তারা জানায়, কুমিল্লা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুহান সরকারের নেতৃত্বে একটি দল কক্সবাজার গিয়ে তাকে নিয়ে আসে। এরপর শুক্রবার পুলিশ লাইনের অভ্যন্তরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।

শুক্রবার সকালে ইকবালকে কুমিল্লা পুলিশ লাইনে নিয়ে আসার পরপরই তার বিষয়ে সাংবাদিকরা পুলিশের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চান।

তখন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর আহমেদ জানান, ঢাকা থেকে আসা পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের একটি দল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তারপর জেলা পুলিশ, গোয়েন্দা শাখাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। কী কারণে সে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখেছিল, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ঘটনার নেপথ্যে কেউ আছে কিনা, অথবা কোনো চক্রের ইন্ধনে সে এ কাজ করেছিল কিনা-সে বিষয়েই মূলত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।  পরে সার্বিক বিষয়ে গণমাধ্যমকে অবহিত করা হবে।

দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দীঘিরপাড় এলাকায় একটি অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে দেশজুড়ে চলে ব্যাপক সহিংসতা।

শারদীয় দুর্গাপূজার মহা অষ্টমীর দিন গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির উত্তর পাড়ে একটি অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ দেখা যায়। এরপর কোরআন শরিফ অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই মণ্ডপে হামলা চালায় একদল লোক। সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।

এর জেরে ধরে ওই দিন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলা করতে যাওয়া একদল ব্যক্তির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সেখানে নিহত হন পাঁচজন। পরদিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপ ও দোকানপাটে হামলা–ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানে হামলায় দুজন নিহত হন। এরপর রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু বসতিতে হামলা করে ভাঙচুর, লুটপাট ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। দেশের আরও অনেক এলাকায় হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করা হয়।

বুধবার কুমিল্লা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইকবাল হোসেন (৩৫) নামে স্থানীয় এক যুবক গভীর রাতে মসজিদ থেকে পবিত্র কোরআন নিয়ে ওই পূজামণ্ডপে রেখেছিলেন। ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ইকবালের বিষয়ে তারা নিশ্চিত হয়েছেন।

পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে, ইকবালের বাবার নাম নূর আহমেদ আলম। তাদের বাড়ি কুমিল্লা নগরের সুজানগর এলাকায়।=-দেশ রূপান্তর

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

নেপথ্যে কেউ আছে কিনা’ ইকবালকে জিজ্ঞেস করবে পুলিশ

প্রকাশিত সময় : ০৮:৪১:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১

কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় নেপথ্যে কেউ আছে কিনা তা মূল অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনের কাছে জানতে চাইবে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে কক্সবাজার থেকে আটকের পর গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত থেকে তাকে ইকবাল সন্দেহে আটক করা হয়। পরে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে তাকে কুমিল্লা পুলিশ লাইনে আনা হয়।

তারা জানায়, কুমিল্লা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুহান সরকারের নেতৃত্বে একটি দল কক্সবাজার গিয়ে তাকে নিয়ে আসে। এরপর শুক্রবার পুলিশ লাইনের অভ্যন্তরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।

শুক্রবার সকালে ইকবালকে কুমিল্লা পুলিশ লাইনে নিয়ে আসার পরপরই তার বিষয়ে সাংবাদিকরা পুলিশের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চান।

তখন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর আহমেদ জানান, ঢাকা থেকে আসা পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের একটি দল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তারপর জেলা পুলিশ, গোয়েন্দা শাখাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। কী কারণে সে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখেছিল, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ঘটনার নেপথ্যে কেউ আছে কিনা, অথবা কোনো চক্রের ইন্ধনে সে এ কাজ করেছিল কিনা-সে বিষয়েই মূলত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।  পরে সার্বিক বিষয়ে গণমাধ্যমকে অবহিত করা হবে।

দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দীঘিরপাড় এলাকায় একটি অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে দেশজুড়ে চলে ব্যাপক সহিংসতা।

শারদীয় দুর্গাপূজার মহা অষ্টমীর দিন গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির উত্তর পাড়ে একটি অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ দেখা যায়। এরপর কোরআন শরিফ অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই মণ্ডপে হামলা চালায় একদল লোক। সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।

এর জেরে ধরে ওই দিন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলা করতে যাওয়া একদল ব্যক্তির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সেখানে নিহত হন পাঁচজন। পরদিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপ ও দোকানপাটে হামলা–ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানে হামলায় দুজন নিহত হন। এরপর রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু বসতিতে হামলা করে ভাঙচুর, লুটপাট ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। দেশের আরও অনেক এলাকায় হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করা হয়।

বুধবার কুমিল্লা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইকবাল হোসেন (৩৫) নামে স্থানীয় এক যুবক গভীর রাতে মসজিদ থেকে পবিত্র কোরআন নিয়ে ওই পূজামণ্ডপে রেখেছিলেন। ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ইকবালের বিষয়ে তারা নিশ্চিত হয়েছেন।

পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে, ইকবালের বাবার নাম নূর আহমেদ আলম। তাদের বাড়ি কুমিল্লা নগরের সুজানগর এলাকায়।=-দেশ রূপান্তর