মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঘূর্ণিঝড় ফিনজালের দাপটে বিপর্যস্ত তামিলনাড়ু, নিহত ৪

ভারতের উত্তর তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতে শনিবার রাতভর তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফিনজাল’। রাতভর ভারী বৃষ্টির জেরে তামিলনাড়ু রাজ্যের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তুমুল দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় চেন্নাইয়ে ৪ জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।

রোববার (১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার সকালে শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণিঝড় ফিনজাল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এখন এটি পুদুচেরির সৈকতের কাছেই অবস্থান করছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে জনজীবন পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।

ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে তামিলনাড়ুর বেশি কয়েকটি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। পুদুচেরির জেলা কালেক্টর পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব বেসরকারি স্কুল এবং সরকারি ও বেসরকারি কলেজগুলোকে ত্রাণ আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে ঘোষণা করেছেন।

ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার রাতে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে তামিলনাড়ুর উপকূল হয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে ‘ফিনজাল’। গভীর রাত পর্যন্ত ‘ল্যান্ডফল’ বা আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া চলেছে। স্থানীয় সময় রাত আড়াইটা পর্যন্ত ‘ফিনজাল’ তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির উপর দিয়ে সাত কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে এগিয়েছে। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণিঝড় পরিণত হয়েছে গভীর নিম্নচাপে। এর প্রভাবে তামিলনাড়ুর উপকূল এলাকায় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার।

ঝড়ের কারণে রোববার ভোর পর্যন্ত চেন্নাই বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়েছিল। ভোর ৪টার পরে আবার বিমান ওঠানামা শুরু হয়েছে।

ফিনজালের প্রভাবে পুদুচেরিতে গত ৩০ বছরের মধ্যে শনিবার সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। শহরটিতে ৪৬ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অন্যান্য জায়গা যেমন কুড্ডালোরে ২৩ সেমি বৃষ্টি হয়েছে, চেন্নাই বিমানবন্দরে ১৪ সেমি, ইয়ারকাডে ১৪ সেমি, চেন্নাইতে ১১ সেমি (মীনামবাক্কাম), চেন্নাইতে ১১ সেমি (নুঙ্গামবাক্কাম), ভেলোরে ১১ সেমি, তিরুপাত্তুরে ৪ সেমি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। ধর্মপুরী ও সালেমে ৫ সেমি বৃষ্টিপাত হয়েছে।

ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ‘ফিনজাল’ দুর্বল হলেও বৃষ্টিপাত এখনই বৃষ্টি থামছে না। তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, দক্ষিণ কর্নাটক এবং কেরালায় আগামী ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি চলতে পারে। রোববার অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

তামিলনাড়ু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন ও উপমুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্ট্যালিন জনজীবন স্বাভাবিক করতে প্রশাসনের কর্মপরিকল্পনা পর্যালোচনা করেছেন। পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে জেলা কালেক্টর এবং শীর্ষ সাথে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন।

উপমুখ্যমন্ত্রী জানান, ছয়টি পাতাল রেলস্টেশন থেকে পানি নিষ্কাশনের কাজ চলছে। তিনি আরও জানান, প্রায় ৩৩৪টি স্থানে যুদ্ধকালীন জলাবদ্ধতা নিরসনে ১ হাজার ৭০০টি মোটর পাম্প ব্যবহার করা হচ্ছে।

তামিলনাড়ুর মন্ত্রী কেকেএসএসআর রামচন্দ্রন বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়ের পরে বড় ক্ষয়ক্ষতির কোনো তাৎক্ষণিক খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতির মূল্যায়ন চলছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ঘূর্ণিঝড় ফিনজালের দাপটে বিপর্যস্ত তামিলনাড়ু, নিহত ৪

প্রকাশিত সময় : ০৪:০৭:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

ভারতের উত্তর তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতে শনিবার রাতভর তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফিনজাল’। রাতভর ভারী বৃষ্টির জেরে তামিলনাড়ু রাজ্যের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তুমুল দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় চেন্নাইয়ে ৪ জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।

রোববার (১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার সকালে শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণিঝড় ফিনজাল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এখন এটি পুদুচেরির সৈকতের কাছেই অবস্থান করছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে জনজীবন পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।

ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে তামিলনাড়ুর বেশি কয়েকটি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। পুদুচেরির জেলা কালেক্টর পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব বেসরকারি স্কুল এবং সরকারি ও বেসরকারি কলেজগুলোকে ত্রাণ আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে ঘোষণা করেছেন।

ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার রাতে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে তামিলনাড়ুর উপকূল হয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে ‘ফিনজাল’। গভীর রাত পর্যন্ত ‘ল্যান্ডফল’ বা আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া চলেছে। স্থানীয় সময় রাত আড়াইটা পর্যন্ত ‘ফিনজাল’ তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির উপর দিয়ে সাত কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে এগিয়েছে। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণিঝড় পরিণত হয়েছে গভীর নিম্নচাপে। এর প্রভাবে তামিলনাড়ুর উপকূল এলাকায় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার।

ঝড়ের কারণে রোববার ভোর পর্যন্ত চেন্নাই বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়েছিল। ভোর ৪টার পরে আবার বিমান ওঠানামা শুরু হয়েছে।

ফিনজালের প্রভাবে পুদুচেরিতে গত ৩০ বছরের মধ্যে শনিবার সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। শহরটিতে ৪৬ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অন্যান্য জায়গা যেমন কুড্ডালোরে ২৩ সেমি বৃষ্টি হয়েছে, চেন্নাই বিমানবন্দরে ১৪ সেমি, ইয়ারকাডে ১৪ সেমি, চেন্নাইতে ১১ সেমি (মীনামবাক্কাম), চেন্নাইতে ১১ সেমি (নুঙ্গামবাক্কাম), ভেলোরে ১১ সেমি, তিরুপাত্তুরে ৪ সেমি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। ধর্মপুরী ও সালেমে ৫ সেমি বৃষ্টিপাত হয়েছে।

ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ‘ফিনজাল’ দুর্বল হলেও বৃষ্টিপাত এখনই বৃষ্টি থামছে না। তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, দক্ষিণ কর্নাটক এবং কেরালায় আগামী ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি চলতে পারে। রোববার অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

তামিলনাড়ু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন ও উপমুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্ট্যালিন জনজীবন স্বাভাবিক করতে প্রশাসনের কর্মপরিকল্পনা পর্যালোচনা করেছেন। পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে জেলা কালেক্টর এবং শীর্ষ সাথে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন।

উপমুখ্যমন্ত্রী জানান, ছয়টি পাতাল রেলস্টেশন থেকে পানি নিষ্কাশনের কাজ চলছে। তিনি আরও জানান, প্রায় ৩৩৪টি স্থানে যুদ্ধকালীন জলাবদ্ধতা নিরসনে ১ হাজার ৭০০টি মোটর পাম্প ব্যবহার করা হচ্ছে।

তামিলনাড়ুর মন্ত্রী কেকেএসএসআর রামচন্দ্রন বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়ের পরে বড় ক্ষয়ক্ষতির কোনো তাৎক্ষণিক খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতির মূল্যায়ন চলছে।