সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্যবসায়ীর চোখ উপড়ানোর দায়ে ৫ জনের যাবজ্জীবন

১৬ বছর আগে ঢাকার ডেমরা এলাকায় রাজীবুল আলম নামে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে দুই চোখ উপড়ে ফেলার ঘটনায় করা মামলায় পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রবিবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলামের আদালত এই রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বিজয় ওরফে শামীম আহম্মেদ, দ্বীন ইসলাম, মো. ইকবাল, নাছু ওরফে নাসির উদ্দিন ও রাজিব ওরফে মোটা রাজিব।

দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার করে টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- রিপন, রাশেদ, তপন ও রাসেল ওরফে মমিতুর রহমান।

রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী রাজীবুল বলেন, “আমি ন্যায়বিচার পাইনি। আমার চোখ উপড়ানোর ঘটনার সঙ্গে ১০ জন আসামি জড়িত ছিল। কিন্তু, আদালত চারজনকে খালাস দিয়েছেন। সমান অপরাধ করেও বাকিরা কীভাবে খালাস পায়? আমরা উচ্চ আদালতে যাব।”

রায়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়ে রাজীবুলের স্ত্রী মলি আক্তার বলেন, “১৬ বছর আগে আমার স্বামীর চোখ উপড়ে ফেলা হয়। সন্তানসহ কতটা কষ্ট নিয়ে আমরা জীবনযাপন করছি। অথচ ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা খালাস পেয়ে গেল।”

“চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা সব আসামির সংশ্লিষ্টতা পেয়েছেন। রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করব,” বলেন মলি আক্তার।

মামলার প্রধান আসামি রুবেল র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ২০১০ সালের ১৬ মার্চ নিহত হন।মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০৮ সালের ২৭ নভেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে রিকশাযোগে ভিকটিম রাজীবুল আলম ডেমরায় বোর্ড মিল এলাকা থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা হন। পথে আসামিরা রিকশা আটকে ভিকটিমকে একটি ফাঁকা প্লটে নিয়ে যায়। এরপর তার হাত-পা বেঁধে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই চোখ উপড়ে ফেলে। এই ঘটনায় রাজীবুলের বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে ডেমরা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি তদন্ত করে ২০০৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ডেমরা থানার পুলিশ পরিদর্শক মীর আতাহার আলী ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১১ সালের ১২ ডিসেম্বর ৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

মৌলভীবাজারে দুর্বৃত্তের হামলায় দুই সহোদর খুন

ব্যবসায়ীর চোখ উপড়ানোর দায়ে ৫ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত সময় : ০৪:২০:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

১৬ বছর আগে ঢাকার ডেমরা এলাকায় রাজীবুল আলম নামে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে দুই চোখ উপড়ে ফেলার ঘটনায় করা মামলায় পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রবিবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলামের আদালত এই রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বিজয় ওরফে শামীম আহম্মেদ, দ্বীন ইসলাম, মো. ইকবাল, নাছু ওরফে নাসির উদ্দিন ও রাজিব ওরফে মোটা রাজিব।

দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার করে টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- রিপন, রাশেদ, তপন ও রাসেল ওরফে মমিতুর রহমান।

রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী রাজীবুল বলেন, “আমি ন্যায়বিচার পাইনি। আমার চোখ উপড়ানোর ঘটনার সঙ্গে ১০ জন আসামি জড়িত ছিল। কিন্তু, আদালত চারজনকে খালাস দিয়েছেন। সমান অপরাধ করেও বাকিরা কীভাবে খালাস পায়? আমরা উচ্চ আদালতে যাব।”

রায়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়ে রাজীবুলের স্ত্রী মলি আক্তার বলেন, “১৬ বছর আগে আমার স্বামীর চোখ উপড়ে ফেলা হয়। সন্তানসহ কতটা কষ্ট নিয়ে আমরা জীবনযাপন করছি। অথচ ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা খালাস পেয়ে গেল।”

“চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা সব আসামির সংশ্লিষ্টতা পেয়েছেন। রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করব,” বলেন মলি আক্তার।

মামলার প্রধান আসামি রুবেল র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ২০১০ সালের ১৬ মার্চ নিহত হন।মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০৮ সালের ২৭ নভেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে রিকশাযোগে ভিকটিম রাজীবুল আলম ডেমরায় বোর্ড মিল এলাকা থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা হন। পথে আসামিরা রিকশা আটকে ভিকটিমকে একটি ফাঁকা প্লটে নিয়ে যায়। এরপর তার হাত-পা বেঁধে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই চোখ উপড়ে ফেলে। এই ঘটনায় রাজীবুলের বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে ডেমরা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি তদন্ত করে ২০০৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ডেমরা থানার পুলিশ পরিদর্শক মীর আতাহার আলী ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১১ সালের ১২ ডিসেম্বর ৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।