শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদন জমা

বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর শ্বেতপত্র তৈরির জন্য গঠিত কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

রবিবার দুপুরে (১ ডিসেম্বর) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং অর্থনীতিতে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি প্রতিবেদনটি জমা দেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ‍্য জানিয়েছে।

আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে সোমবার (২ ডিসেম্বর)। জানা গেছে, ২৪টি অধ্যায়ের সন্নিবেশিত হয়েছে দুর্নীতির বর্ণনা। অনিয়মের ফিরিস্তি তুলে ধরার পাশাপাশি এতে আছে প্রতিবেদনের ভূমিকা, উপসংহার ও অন্যান্য সংযুক্তি।

প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রে মোটা দাগে যেসব বিষয়াদি নিয়ে আলোকপাত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, সেগুলো হলো—

সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা: অভ্যন্তরীণ সম্পদ, সরকারি ব্যয় (সরকারি বিনিয়োগ, এডিপি, ভর্তুকি এবং ঋণ), বাজেট ঘাটতির অর্থায়ন।

মুদ্রাস্ফীতি এবং খাদ্য ব্যবস্থাপনা: উৎপাদন, সরকারি সংগ্রহ এবং খাদ্য বণ্টন।

চাহিদা, সরবরাহ, মূল্য নির্ধারণ, খরচ এবং ক্রয় চুক্তি।

দেশে এবং বিদেশে কর্মসংস্থান, আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক মজুরি; যুব কর্মসংস্থান।

প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রে আরো বলা হয়—

শ্বেতপত্রটি প্রস্তুতের জন্য বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শক্রমে তিনি কমিটির প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যকে মনোনীত করতে পারেন। কমিটির রূপরেখা নিম্নরূপ হতে পারে:

ক) কমিটির সদস্যরা অবৈতনিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন;

খ) পরিকল্পনা কমিশন কমপ্লেক্সের যথোপযুক্ত কোনো ভবনকে কমিটির দপ্তর হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে;

গ) পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করতে পারে;

ঘ) সরকারের সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/ সংস্থা প্রস্তাবিত কমিটির চাহিদানুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহসহ সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে;

ঙ) ‘বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি’ নামে প্রস্তাবিত কমিটি আগামী নব্বই দিনের মধ্যে সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবেন।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ২৮ আগস্ট দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক চিত্র জানতে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠিত হয়। ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয় এই কমিটিকে।

শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির আনুষ্ঠানিক নাম ‘বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি’। কমিটি ৯০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন হস্তান্তর করবে বলে নির্দেশনা ছিল।

প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রে ছয়টি বিষয়ে আলোকপাত করার প্রস্তাব রেখেছিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। সেগুলো হলো— সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা, মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা, বাহ্যিক ভারসাম্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বেসরকারি বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদন জমা

প্রকাশিত সময় : ০৪:২৩:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর শ্বেতপত্র তৈরির জন্য গঠিত কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

রবিবার দুপুরে (১ ডিসেম্বর) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং অর্থনীতিতে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি প্রতিবেদনটি জমা দেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ‍্য জানিয়েছে।

আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে সোমবার (২ ডিসেম্বর)। জানা গেছে, ২৪টি অধ্যায়ের সন্নিবেশিত হয়েছে দুর্নীতির বর্ণনা। অনিয়মের ফিরিস্তি তুলে ধরার পাশাপাশি এতে আছে প্রতিবেদনের ভূমিকা, উপসংহার ও অন্যান্য সংযুক্তি।

প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রে মোটা দাগে যেসব বিষয়াদি নিয়ে আলোকপাত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, সেগুলো হলো—

সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা: অভ্যন্তরীণ সম্পদ, সরকারি ব্যয় (সরকারি বিনিয়োগ, এডিপি, ভর্তুকি এবং ঋণ), বাজেট ঘাটতির অর্থায়ন।

মুদ্রাস্ফীতি এবং খাদ্য ব্যবস্থাপনা: উৎপাদন, সরকারি সংগ্রহ এবং খাদ্য বণ্টন।

চাহিদা, সরবরাহ, মূল্য নির্ধারণ, খরচ এবং ক্রয় চুক্তি।

দেশে এবং বিদেশে কর্মসংস্থান, আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক মজুরি; যুব কর্মসংস্থান।

প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রে আরো বলা হয়—

শ্বেতপত্রটি প্রস্তুতের জন্য বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শক্রমে তিনি কমিটির প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যকে মনোনীত করতে পারেন। কমিটির রূপরেখা নিম্নরূপ হতে পারে:

ক) কমিটির সদস্যরা অবৈতনিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন;

খ) পরিকল্পনা কমিশন কমপ্লেক্সের যথোপযুক্ত কোনো ভবনকে কমিটির দপ্তর হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে;

গ) পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করতে পারে;

ঘ) সরকারের সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/ সংস্থা প্রস্তাবিত কমিটির চাহিদানুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহসহ সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে;

ঙ) ‘বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি’ নামে প্রস্তাবিত কমিটি আগামী নব্বই দিনের মধ্যে সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবেন।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ২৮ আগস্ট দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক চিত্র জানতে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠিত হয়। ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয় এই কমিটিকে।

শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির আনুষ্ঠানিক নাম ‘বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি’। কমিটি ৯০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন হস্তান্তর করবে বলে নির্দেশনা ছিল।

প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রে ছয়টি বিষয়ে আলোকপাত করার প্রস্তাব রেখেছিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। সেগুলো হলো— সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা, মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা, বাহ্যিক ভারসাম্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বেসরকারি বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান।