মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত-চীন-রাশিয়াকে কড়া হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি হুমকি দিয়েছেন, যদি ব্রিকস দেশগুলো আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য মার্কিন ডলারের বিকল্প ব্যবহার বা ডলারের আধিপত্যকে খর্ব করার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।

আগামী জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে হয়তো শুল্কযুদ্ধের দ্বিতীয় ঢেউ দেখতে যাচ্ছে বিশ্ব। এরইমধ্যে কয়েকটি দেশে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। খবর এনডিটিভির।

গত অক্টোবরে রাশিয়ার কাজানে ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর বৈঠকে ডলার-বহির্ভূত লেনদেন নিয়ে আলোচনা হয়। এবার সেই ইস্যুতে মন্তব্য করলেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইরান, মিসর, ইথিওপিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ডলার থেকে ব্রিকসের সদস্য দেশগুলো যে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তা দাঁড়িয়ে দেখার দিন শেষ। এসব দেশকে কথা দিতে হবে, তারা নতুন ব্রিকস মুদ্রা তৈরি করবে না, ডলারের পরিবর্তে অন্য কোনো দেশের মুদ্রা ব্যবহার করবে না। তারা তা যদি করে, তা হলে যুক্তরাষ্ট্রে কিছু বিক্রি করতে চাইলে সেই পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে।

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের বদলে অন্য কিছু আনতে পারবে না ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো। ট্রাম্প বলেন, যদি কেউ ডলারের বিরুদ্ধে যেতে চায়, তারা অন্য কিছু খুঁজে নিতে পারে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্রিকস গোষ্ঠীর ডলার প্রতিস্থাপনের কোনো সুযোগ নেই, এবং যে দেশ এটি করার চেষ্টা করবে, তাকে আমেরিকার কাছ থেকে বিদায় নিতে হবে।

অক্টোবরে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনে একটি যৌথ ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়েছিল, যেখানে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক আরও শক্তিশালী করা এবং ব্রিকস ক্রস-বর্ডার পেমেন্টস ইনিশিয়েটিভের অধীনে স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেন কার্যকর করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

তবে সম্মেলনের শেষে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্বীকার করেন, বেলজিয়াম-ভিত্তিক সুইফটের মতো শক্তিশালী আর্থিক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরিতে এখনো ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো সফল হয়নি।

এদিকে ভারত ডি-ডলারাইজেশনের বিপক্ষে। অক্টোবরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ডি-ডলারাইজেশন ভারতের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক বা কৌশলগত নীতির অংশ নয়।

তবে তিনি জানান, এমন ক্ষেত্রে যেখানে বাণিজ্য অংশীদাররা ডলার গ্রহণ করে না বা নীতিগত জটিলতা দেখা দেয়, সেখানে বিকল্প উপায় খোঁজা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ভারত-চীন-রাশিয়াকে কড়া হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

প্রকাশিত সময় : ০৪:৫৫:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি হুমকি দিয়েছেন, যদি ব্রিকস দেশগুলো আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য মার্কিন ডলারের বিকল্প ব্যবহার বা ডলারের আধিপত্যকে খর্ব করার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।

আগামী জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে হয়তো শুল্কযুদ্ধের দ্বিতীয় ঢেউ দেখতে যাচ্ছে বিশ্ব। এরইমধ্যে কয়েকটি দেশে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। খবর এনডিটিভির।

গত অক্টোবরে রাশিয়ার কাজানে ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর বৈঠকে ডলার-বহির্ভূত লেনদেন নিয়ে আলোচনা হয়। এবার সেই ইস্যুতে মন্তব্য করলেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইরান, মিসর, ইথিওপিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ডলার থেকে ব্রিকসের সদস্য দেশগুলো যে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তা দাঁড়িয়ে দেখার দিন শেষ। এসব দেশকে কথা দিতে হবে, তারা নতুন ব্রিকস মুদ্রা তৈরি করবে না, ডলারের পরিবর্তে অন্য কোনো দেশের মুদ্রা ব্যবহার করবে না। তারা তা যদি করে, তা হলে যুক্তরাষ্ট্রে কিছু বিক্রি করতে চাইলে সেই পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে।

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের বদলে অন্য কিছু আনতে পারবে না ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো। ট্রাম্প বলেন, যদি কেউ ডলারের বিরুদ্ধে যেতে চায়, তারা অন্য কিছু খুঁজে নিতে পারে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্রিকস গোষ্ঠীর ডলার প্রতিস্থাপনের কোনো সুযোগ নেই, এবং যে দেশ এটি করার চেষ্টা করবে, তাকে আমেরিকার কাছ থেকে বিদায় নিতে হবে।

অক্টোবরে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনে একটি যৌথ ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়েছিল, যেখানে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক আরও শক্তিশালী করা এবং ব্রিকস ক্রস-বর্ডার পেমেন্টস ইনিশিয়েটিভের অধীনে স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেন কার্যকর করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

তবে সম্মেলনের শেষে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্বীকার করেন, বেলজিয়াম-ভিত্তিক সুইফটের মতো শক্তিশালী আর্থিক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরিতে এখনো ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো সফল হয়নি।

এদিকে ভারত ডি-ডলারাইজেশনের বিপক্ষে। অক্টোবরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ডি-ডলারাইজেশন ভারতের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক বা কৌশলগত নীতির অংশ নয়।

তবে তিনি জানান, এমন ক্ষেত্রে যেখানে বাণিজ্য অংশীদাররা ডলার গ্রহণ করে না বা নীতিগত জটিলতা দেখা দেয়, সেখানে বিকল্প উপায় খোঁজা হয়।