মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অভিশংসিত হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

দ্বিতীয় দফায় আর রক্ষা পেলেন না দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। তার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফায় আনা অভিশংসনের প্রস্তাব আজ শনিবার স্থানীয় সময় বিকেলে দেশটির পার্লামেন্টে পাস হয়েছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার ৩০০ আসনের পার্লামেন্টে ১৯২টি আসন রয়েছে বিরোধী দলগুলোর। আর প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করতে ২০০ ভোট দরকার ছিল। অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে পক্ষে ২০৪ জন আইনপ্রণেতা ভোট দিয়েছেন। বিপক্ষে ভোট পড়েছিল ৮৫টি। তিনজন ভোটদানে বিরত ছিলেন।

পার্লামেন্টের স্পিকার ভোটের ফলাফল ঘোষণা করার পর বিরোধী দলের এমপিরা উল্লাসে মাতেন, অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা নীরবে অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে চলে যান।

ভোট গণনার সময়, ক্ষমতাসীন দলের কিছু সংসদ সদস্যকে প্রার্থনায় হাত বাঁধতে দেখা গেছে।

পার্লামেন্টের স্পিকার উ ওন-শিকের মতে, অভিশংসন সংক্রান্ত নথির কপি ইউনকে এবং সাংবিধানিক আদালতে পৌঁছে দেওয়ার পরে ইউনের প্রেসিডেন্সি ক্ষমতা ও দায়িত্ব স্থগিত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হবেন।

তবে প্রেসিডেন্সি ক্ষমতা স্থগিত হওয়া সত্ত্বেও, সাংবিধানিক আদালত রায় না দেওয়া পর্যন্ত পদে থাকবেন ইউন। তার অভিশংসন বহাল রাখা হবে কিনা তা নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবে সাংবিধানিক আদালত। আদালত যদি ইয়ুনের বিরুদ্ধে রায় দেয়, তাহলে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিশংসিত হবেন।

এর আগে, গত শনিবার ইউন বিরোধীদল নিয়ন্ত্রিত পার্লামেন্টে অভিশংসন উদ্যোগ থেকে রক্ষা পান। সেদিন তার ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) আইনপ্রণেতারা পার্লামেন্টের ওই অধিবেশন বয়কট করায় বেঁচে যান।

প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের গত সপ্তাহে আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিলে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট ইউন। ইউনের আদেশের বিরোধিতা করে পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিরোধীদলীয় সদস্যরা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে পার্লামেন্টে প্রবেশ করেছিল। তাদের ভোট আর জনগণের বিক্ষোভের কারণে সামরিক শাসন উঠিয়ে নিতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট। এরপর থেকেই ইউনের পদত্যাগের জন্য দেশব্যাপী দাবি উঠে।

 

তবে এত কিছুর পরেও গত ১২ ডিসেম্বর টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে ইউন বলেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না। ইউন আরও বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে তদন্ত বা অভিশংসন যাই আনা হোক আমি দৃঢ় থাকব। আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করব। তবে শেষ রক্ষা আর হলো না তার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

অভিশংসিত হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

প্রকাশিত সময় : ০৬:০৭:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

দ্বিতীয় দফায় আর রক্ষা পেলেন না দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। তার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফায় আনা অভিশংসনের প্রস্তাব আজ শনিবার স্থানীয় সময় বিকেলে দেশটির পার্লামেন্টে পাস হয়েছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার ৩০০ আসনের পার্লামেন্টে ১৯২টি আসন রয়েছে বিরোধী দলগুলোর। আর প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করতে ২০০ ভোট দরকার ছিল। অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে পক্ষে ২০৪ জন আইনপ্রণেতা ভোট দিয়েছেন। বিপক্ষে ভোট পড়েছিল ৮৫টি। তিনজন ভোটদানে বিরত ছিলেন।

পার্লামেন্টের স্পিকার ভোটের ফলাফল ঘোষণা করার পর বিরোধী দলের এমপিরা উল্লাসে মাতেন, অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা নীরবে অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে চলে যান।

ভোট গণনার সময়, ক্ষমতাসীন দলের কিছু সংসদ সদস্যকে প্রার্থনায় হাত বাঁধতে দেখা গেছে।

পার্লামেন্টের স্পিকার উ ওন-শিকের মতে, অভিশংসন সংক্রান্ত নথির কপি ইউনকে এবং সাংবিধানিক আদালতে পৌঁছে দেওয়ার পরে ইউনের প্রেসিডেন্সি ক্ষমতা ও দায়িত্ব স্থগিত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হবেন।

তবে প্রেসিডেন্সি ক্ষমতা স্থগিত হওয়া সত্ত্বেও, সাংবিধানিক আদালত রায় না দেওয়া পর্যন্ত পদে থাকবেন ইউন। তার অভিশংসন বহাল রাখা হবে কিনা তা নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবে সাংবিধানিক আদালত। আদালত যদি ইয়ুনের বিরুদ্ধে রায় দেয়, তাহলে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিশংসিত হবেন।

এর আগে, গত শনিবার ইউন বিরোধীদল নিয়ন্ত্রিত পার্লামেন্টে অভিশংসন উদ্যোগ থেকে রক্ষা পান। সেদিন তার ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) আইনপ্রণেতারা পার্লামেন্টের ওই অধিবেশন বয়কট করায় বেঁচে যান।

প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের গত সপ্তাহে আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিলে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট ইউন। ইউনের আদেশের বিরোধিতা করে পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিরোধীদলীয় সদস্যরা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে পার্লামেন্টে প্রবেশ করেছিল। তাদের ভোট আর জনগণের বিক্ষোভের কারণে সামরিক শাসন উঠিয়ে নিতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট। এরপর থেকেই ইউনের পদত্যাগের জন্য দেশব্যাপী দাবি উঠে।

 

তবে এত কিছুর পরেও গত ১২ ডিসেম্বর টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে ইউন বলেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না। ইউন আরও বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে তদন্ত বা অভিশংসন যাই আনা হোক আমি দৃঢ় থাকব। আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করব। তবে শেষ রক্ষা আর হলো না তার।