মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফের রোহিঙ্গা ঢলের শঙ্কা, আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা বাংলাদেশের

এক সপ্তাহের যুদ্ধে মংডু, বুথিডং ও পালেতাওয়ার শহরসহ মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের ৮০ শতাংশের বেশি এলাকা দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এ অবস্থায় সেখানে বসবাসকারী কয়েক লাখ রোহিঙ্গা মুসলিমের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে উদ্বিগ্ন অন্তর্র্বতী সরকার। রোহিঙ্গা সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রক আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। অফাবৎঃরংবসবহঃ তিনি আরও বলেন, ‘রাখাইন প্রদেশের ৮০-৮৫ শতাংশ জায়গা দখল করে নিয়েছে আরাকান আর্মি। বিশেষ করে যে সব এলাকায় রোহিঙ্গাদের প্রধান বসবাস, সেগুলি তাদের নিয়ন্ত্রণে। এর চেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তও আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে।’ খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, আরাকান আর্মি বনাম মিয়ানমারের শাসক সামরিক জান্তা বাহিনীর লড়াইয়ের চূড়ান্ত ফল কী হয়, তা এখনো অস্পষ্ট। তবে অন্তর্র্বতী সরকার ইতিমধ্যে উদ্যোগী হচ্ছে- যাতে অন্তত সীমান্ত ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়। তবে গভীরভাবে বিবেচনা না করে এ বিষয়ে নির্ণায়ক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না বলে জানান তিনি। বিদ্রোহীরা সীমান্ত দখলের পরে বাংলাদেশ সরকার টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে। ফলে অসুবিধায় পড়েছেন চট্টগ্রামবাসী। উল্লেখ্য এক সময় জান্তার ‘চক্ষুশূল’ রোহিঙ্গা মুসলিমরা চলতি যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সরকারি বাহিনীর সহযোগী হয়েছিল! আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) যোদ্ধারা গত ছয় মাস ধরে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় জান্তা ফৌজের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়েছে। যদিও তাতে ‘শেষরক্ষা’ হয়নি। এ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা মুসলিমরা নতুন করে আরাকান আর্মির নিশানা হতে পারেন বলে আশঙ্কা। জাতিসংঘ বলছে, ২০১৭-র আগস্টে মিয়ানমারে গোষ্ঠীহিংসা শুরুর পরে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। যাদের অধিকাংশই রাখাইন প্রদেশের বাসিন্দা। শেখ হাসিনার সরকারের আমলে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় ধাপে ধাপে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর চুক্তি হলেও জান্তা সরকার তা ঠিকভাবে মেনে চলেনি বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, এখনো মিয়ানমারে রয়েছেন কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। গৃহযুদ্ধের জেরে নতুন করে শরণার্থীর ঢল নামলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ফের রোহিঙ্গা ঢলের শঙ্কা, আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা বাংলাদেশের

প্রকাশিত সময় : ০৬:১৫:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

এক সপ্তাহের যুদ্ধে মংডু, বুথিডং ও পালেতাওয়ার শহরসহ মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের ৮০ শতাংশের বেশি এলাকা দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এ অবস্থায় সেখানে বসবাসকারী কয়েক লাখ রোহিঙ্গা মুসলিমের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে উদ্বিগ্ন অন্তর্র্বতী সরকার। রোহিঙ্গা সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রক আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। অফাবৎঃরংবসবহঃ তিনি আরও বলেন, ‘রাখাইন প্রদেশের ৮০-৮৫ শতাংশ জায়গা দখল করে নিয়েছে আরাকান আর্মি। বিশেষ করে যে সব এলাকায় রোহিঙ্গাদের প্রধান বসবাস, সেগুলি তাদের নিয়ন্ত্রণে। এর চেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তও আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে।’ খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, আরাকান আর্মি বনাম মিয়ানমারের শাসক সামরিক জান্তা বাহিনীর লড়াইয়ের চূড়ান্ত ফল কী হয়, তা এখনো অস্পষ্ট। তবে অন্তর্র্বতী সরকার ইতিমধ্যে উদ্যোগী হচ্ছে- যাতে অন্তত সীমান্ত ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়। তবে গভীরভাবে বিবেচনা না করে এ বিষয়ে নির্ণায়ক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না বলে জানান তিনি। বিদ্রোহীরা সীমান্ত দখলের পরে বাংলাদেশ সরকার টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে। ফলে অসুবিধায় পড়েছেন চট্টগ্রামবাসী। উল্লেখ্য এক সময় জান্তার ‘চক্ষুশূল’ রোহিঙ্গা মুসলিমরা চলতি যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সরকারি বাহিনীর সহযোগী হয়েছিল! আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) যোদ্ধারা গত ছয় মাস ধরে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় জান্তা ফৌজের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়েছে। যদিও তাতে ‘শেষরক্ষা’ হয়নি। এ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা মুসলিমরা নতুন করে আরাকান আর্মির নিশানা হতে পারেন বলে আশঙ্কা। জাতিসংঘ বলছে, ২০১৭-র আগস্টে মিয়ানমারে গোষ্ঠীহিংসা শুরুর পরে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। যাদের অধিকাংশই রাখাইন প্রদেশের বাসিন্দা। শেখ হাসিনার সরকারের আমলে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় ধাপে ধাপে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর চুক্তি হলেও জান্তা সরকার তা ঠিকভাবে মেনে চলেনি বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, এখনো মিয়ানমারে রয়েছেন কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। গৃহযুদ্ধের জেরে নতুন করে শরণার্থীর ঢল নামলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন