মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিস্টিক একনের পরিচর্যা

একনে নিয়ে আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। বয়ঃসন্ধিকাল থেকে কমবেশি সবারই এ সমস্যা দেখা দেয়। কারণ, বয়ঃসন্ধিকাল থেকে শুরু হয় আমাদের শরীরে হরমোনাল পরিবর্তন। আর এই পরিবর্তনের কারণে শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে ত্বকেরও পরিবর্তন আসে। আর তখন থেকেই একনে সমস্যার শুরু। এই একনের আবার বিভিন্ন ধরণ রয়েছে, যার মধ্যে একটি হচ্ছে- সিস্টিক একনে। আজকে আসুন জেনে নেই, কীভাবে ঘরোয়া উপায়ে সিস্টিক একনের পরিচর্যা করবেন।

সিস্টিক একনে কী?
সাধারণ একনের চেয়ে সিস্টিক একনে ভিন্ন। এই একনেগুলো নরমাল একনের চেয়ে আকারে তুলনামূলক বেশি বড়, লাল এবং খুব ব্যাথাযুক্ত হয়। এই ধরনের একনে সাধারণ একনের মতো সহজে চলে যায়না, বরং এই সিস্টিক একনেগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং যেতেও বেশ সময় লাগে। আর পরবর্তীতে দাগও পড়ে যায়।
কেন সিস্টিক একনে হয়?
স্কিনে একনে তখনই হয়, যখন আপনার স্কিনের পোরস ক্লগ হয়ে যায় এবং স্কিনে অনেক ডেড স্কিন সেলস বা মৃত কোষ জমে। অয়েলি স্কিনে একনে হবার চান্স বেশি থাকে। হরমোনাল ইমব্যালেন্স, ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব, ত্বকে ডেড সেল এবং ময়লা জমে পোরস ক্লগড হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত মেকাপ ব্যবহার ও প্রপার ক্লেনজিং না করা, খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব এবং আনহেলদি লাইফস্টাইল সহ আরও বিভিন্ন কারণে সিস্টিক একনে হতে পারে।
ঘরোয়া উপায়ে সিস্টিক একনের পরিচর্যা
চলুন জানা যাক, ঘরোয়া উপায়ে প্রাকৃতিক জিনিস ব্যবহার করে কীভাবে সিস্টিক একনের পরিচর্যা করা যেতে পারে।
নিম
প্রথমে ৯/১০ টা নিমপাতা অল্প পরিমান পানির সাথে মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তারপর ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে ১৫/২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে সপ্তাহে ৩/৪ দিন ব্যবহার করলে বেশ ভালো রেজাল্ট পাওয়া যাবে।
৭/৮ টি নিমপাতা ভালোভাবে ফুটিয়ে গ্লাসে ছেঁকে নিতে হবে। এভাবে প্রতিদিন সকালে পানিটা খেলে ভেতর থেকে টক্সিন কমাতে সাহায্য করবে এবং ব্রন হবার প্রবণতা কমে যাবে।
ডিমের সাদা অংশ
ডিমের কুসুম থেকে সাদা অংশ আলাদা করে একটা ব্রাশ এর সাহায্যে পুরো মুখে সাদা অংশ লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে এরপর নরমাল পানি দিয়ে ফেইস ক্লিন করে নিতে হবে। এভাবে রোজ একবার করলে একনে কমে যাবে।
অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরার শাঁস ভেতর থেকে নিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী অ্যাপ্লাই করতে হবে।  এরপর মুখে লাগিয়ে ২০/৩০ মিনিট পর ধুয়ে নিতে হবে, এভাবে দিনে দুইবার ইউজ করলে ব্রণ কমে যাবে, স্কিন গ্লোয়িং হবে এবং ব্রণ এর দাগ কমবে।
অ্যালোভেরার ভেতরের শাঁস বের করার পর ভালোভাবে ব্লেন্ড করে আইস কিউবের মতো করে ডিপ ফ্রিজে রাখতে পারেন। প্রতিদিন বাহির থেকে এসে কিংবা রান্নার পর ভালোভাবে  মুখ ক্লিন করে এই কিউবগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এতে পোরসগুলো ছোট হবে এবং ব্রণ হবার আশংকাও কমে যাবে।
মুলতানি মাটি
২ চামচ মুলতানি মাটির সাথে গোলাপজল মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে। মুখ পুরোপুরি শুকানোর একটু আগে নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে একবার বা দুইবার ব্যবহার করলে অতিরিক্ত অয়েল কনট্রোল হবে এবং রোমকূপ পরিষ্কার থাকবে।
স্টিমিং
স্টিমিং এর মাধ্যমে পোরস ওপেন হয় এবং ভেতর থেকে তেল, ময়লা ক্লিন করে এবং ব্রণ কমায়। একটা বড় বাটি বা গামলায় গরম পানি নিতে হবে। তার ভেতর ১/২ ফোটা টি ট্রি ওয়েল দিয়ে মুখে ৫/৭ মিনিট গরম ভাপ নিয়ে ফেইসওয়াস দিয়ে ফেইস ক্লিন করতে হবে। স্টিমিং এর কারণে ত্বকের পোরসগুলো বড় হয়ে যায় তাই পোরস ক্লোজ করার জন্য একটা বরফ ঘসে নিতে হবে।
এভাবে ঘরে বসেই ন্যাচারাল উপায়ে খুব সহজেই সিস্টিক একনে দূর করা সম্ভব। শারীরিক কিংবা মেডিসিনের প্রভাবে একনে হলে এবং একনের মাত্রা বেশি হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, ঝুলন্ত  লাশ উদ্ধার

সিস্টিক একনের পরিচর্যা

প্রকাশিত সময় : ১০:৫৩:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ অগাস্ট ২০২১

একনে নিয়ে আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। বয়ঃসন্ধিকাল থেকে কমবেশি সবারই এ সমস্যা দেখা দেয়। কারণ, বয়ঃসন্ধিকাল থেকে শুরু হয় আমাদের শরীরে হরমোনাল পরিবর্তন। আর এই পরিবর্তনের কারণে শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে ত্বকেরও পরিবর্তন আসে। আর তখন থেকেই একনে সমস্যার শুরু। এই একনের আবার বিভিন্ন ধরণ রয়েছে, যার মধ্যে একটি হচ্ছে- সিস্টিক একনে। আজকে আসুন জেনে নেই, কীভাবে ঘরোয়া উপায়ে সিস্টিক একনের পরিচর্যা করবেন।

সিস্টিক একনে কী?
সাধারণ একনের চেয়ে সিস্টিক একনে ভিন্ন। এই একনেগুলো নরমাল একনের চেয়ে আকারে তুলনামূলক বেশি বড়, লাল এবং খুব ব্যাথাযুক্ত হয়। এই ধরনের একনে সাধারণ একনের মতো সহজে চলে যায়না, বরং এই সিস্টিক একনেগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং যেতেও বেশ সময় লাগে। আর পরবর্তীতে দাগও পড়ে যায়।
কেন সিস্টিক একনে হয়?
স্কিনে একনে তখনই হয়, যখন আপনার স্কিনের পোরস ক্লগ হয়ে যায় এবং স্কিনে অনেক ডেড স্কিন সেলস বা মৃত কোষ জমে। অয়েলি স্কিনে একনে হবার চান্স বেশি থাকে। হরমোনাল ইমব্যালেন্স, ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব, ত্বকে ডেড সেল এবং ময়লা জমে পোরস ক্লগড হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত মেকাপ ব্যবহার ও প্রপার ক্লেনজিং না করা, খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব এবং আনহেলদি লাইফস্টাইল সহ আরও বিভিন্ন কারণে সিস্টিক একনে হতে পারে।
ঘরোয়া উপায়ে সিস্টিক একনের পরিচর্যা
চলুন জানা যাক, ঘরোয়া উপায়ে প্রাকৃতিক জিনিস ব্যবহার করে কীভাবে সিস্টিক একনের পরিচর্যা করা যেতে পারে।
নিম
প্রথমে ৯/১০ টা নিমপাতা অল্প পরিমান পানির সাথে মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তারপর ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে ১৫/২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে সপ্তাহে ৩/৪ দিন ব্যবহার করলে বেশ ভালো রেজাল্ট পাওয়া যাবে।
৭/৮ টি নিমপাতা ভালোভাবে ফুটিয়ে গ্লাসে ছেঁকে নিতে হবে। এভাবে প্রতিদিন সকালে পানিটা খেলে ভেতর থেকে টক্সিন কমাতে সাহায্য করবে এবং ব্রন হবার প্রবণতা কমে যাবে।
ডিমের সাদা অংশ
ডিমের কুসুম থেকে সাদা অংশ আলাদা করে একটা ব্রাশ এর সাহায্যে পুরো মুখে সাদা অংশ লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে এরপর নরমাল পানি দিয়ে ফেইস ক্লিন করে নিতে হবে। এভাবে রোজ একবার করলে একনে কমে যাবে।
অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরার শাঁস ভেতর থেকে নিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী অ্যাপ্লাই করতে হবে।  এরপর মুখে লাগিয়ে ২০/৩০ মিনিট পর ধুয়ে নিতে হবে, এভাবে দিনে দুইবার ইউজ করলে ব্রণ কমে যাবে, স্কিন গ্লোয়িং হবে এবং ব্রণ এর দাগ কমবে।
অ্যালোভেরার ভেতরের শাঁস বের করার পর ভালোভাবে ব্লেন্ড করে আইস কিউবের মতো করে ডিপ ফ্রিজে রাখতে পারেন। প্রতিদিন বাহির থেকে এসে কিংবা রান্নার পর ভালোভাবে  মুখ ক্লিন করে এই কিউবগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এতে পোরসগুলো ছোট হবে এবং ব্রণ হবার আশংকাও কমে যাবে।
মুলতানি মাটি
২ চামচ মুলতানি মাটির সাথে গোলাপজল মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে। মুখ পুরোপুরি শুকানোর একটু আগে নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে একবার বা দুইবার ব্যবহার করলে অতিরিক্ত অয়েল কনট্রোল হবে এবং রোমকূপ পরিষ্কার থাকবে।
স্টিমিং
স্টিমিং এর মাধ্যমে পোরস ওপেন হয় এবং ভেতর থেকে তেল, ময়লা ক্লিন করে এবং ব্রণ কমায়। একটা বড় বাটি বা গামলায় গরম পানি নিতে হবে। তার ভেতর ১/২ ফোটা টি ট্রি ওয়েল দিয়ে মুখে ৫/৭ মিনিট গরম ভাপ নিয়ে ফেইসওয়াস দিয়ে ফেইস ক্লিন করতে হবে। স্টিমিং এর কারণে ত্বকের পোরসগুলো বড় হয়ে যায় তাই পোরস ক্লোজ করার জন্য একটা বরফ ঘসে নিতে হবে।
এভাবে ঘরে বসেই ন্যাচারাল উপায়ে খুব সহজেই সিস্টিক একনে দূর করা সম্ভব। শারীরিক কিংবা মেডিসিনের প্রভাবে একনে হলে এবং একনের মাত্রা বেশি হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে।