মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বারবার প্রস্রাবের চাপ, মেনে চলুন চিকিৎসকের পরামর্শ

অকারণেই বারবার প্রস্রাব পেলে কিংবা একটু পেটে চাপ পড়লেই যদি প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তবে তা একটি রোগ। লজ্জায় সমস্যা লুকিয়ে রাখবেন না। মূত্রথলির এই অসুখে সাবধান থাকার পরামর্শ ইউরোলজিস্টদের।

কিছুতেই প্রস্রাবের বেগ চাপতে পারেন না। অপ্রত্যাশিতভাবে বারবার এমন হতে থাকে। যার ঠেলায় কোথাও যেতে পারেন না। প্রথমে তেমন গা করেননি। ধীরে ধীরে সমস্যা বাড়তে শুরু করল। তখন চিকিৎসকের কাছে গেলে ধরা পড়ে, ওভারঅ্যাকটিভ ব্লাডার। খবর সংবাদ প্রতিদিনের।

কী এই সমস্যা?

এই অসুখে দেখা যায়, ব্লাডার বা মূত্রথলির পেশি প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে যায়, প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি কাজ করতে থাকে। ফলে একজনের বারবার প্রস্রাব পেতে থাকে। যেমন হয়েছিল তপতী দেবীর। অনেকের আবার মূত্রথলি থেকে মূত্র লিকও হতে পারে।

কেন হয়?

মূত্রথলির এই সমস্যার পিছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। কেন এমন হচ্ছে সেটা চিহ্নিত করা মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। অনেক রকম সমস্যা এর জন্য দায়ী হতে পারে।

ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন- মূত্রথলিতে বা কিডনিতে ইনফেকশন হলে তা থেকে এমন সমস্যা হতে পারে।

আউটফ্লো অবস্ট্রাকশন- বিশেষত পুরুষদের ক্ষেত্রে এমন হয়। প্রস্টেটের সমস্যা থেকে ব্লাডারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

নিউরো বা স্নায়ুজনিত সমস্যা- যাদের পারকিনসনস ডিজিজ, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিসের সমস্যা রয়েছে অথবা যাদের একবার স্ট্রোক হয়ে গিয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও এই ওভারঅ্যাকটিভ ব্লাডারের সমস্যা দেখা দেয়।

দায়ী কিছু ওষুধ- উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ (ল্যাসিক্স, ডাইয়ুরেটিক্স) টানা খেলে তা থেকে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া মদ্যপান কিংবা কফি বেশি পান করলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কাদের ভয় বেশি?

মহিলা কিংবা পুরুষ সকলের ক্ষেত্রেই এমন হতে পারে। বিশেষ করে, যে সকল মহিলার মেনোপজ হয়ে গিয়েছে তাদের রিস্ক অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি থাকে। আর পুরুষদের, যাদের প্রস্টেটের অসুখ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে মূত্রথলির এমন সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। লক্ষণ থাকলে ইউরিন কালচার, ব্লাডার ক্ল্যান, সিস্টোস্কোপি, ইউরো ডায়নামিক টেস্টিং করে ওভারঅ্যাকটিভ ব্লাডার রোগ নির্ণয় করা হয়।

শুরুতেই সাবধান হোন

১. মূত্রথলির এমন সমস্যা হলে শুরুতেই চিকিৎসকের কাছে যান।

২. যতটা সম্ভব কফি কিংবা ক্যাফিন জাতীয় পানীয় বর্জন করুন।

৩. কার্বোনেটেড ড্রিংক, মিষ্টি জাতীয় পানীয়, মশলাদার খাবার, অ্যাসিডিক ফুড ডায়েট থেকে বাদ দিন।

৪. ওজন বেশি থাকলে তা কমাতে হবে।

৫. পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ করুন।

৬. এতে পেলভিক বা মূত্রনালির পেশির জোর বৃদ্ধি পায়।

৭. সারাদিনে সময় ধরে বাথরুমে যাওয়ার অভ্যাস করুন।

৮. যাদের বারবার প্রস্রাব হয়ে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে, তারা একটা ডায়েরি মেনটেইন করুন। তাহলে চিকিৎসা করতে, সমস্যা চিহ্নিত করতে অনেক সুবিধা হবে।

৯. এইগুলি মেনে চলার পাশাপাশি সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবেই। বিশেষ কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলির দ্বারা এই অসুখ কিডনি কিংবা তোলা সম্ভব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, ঝুলন্ত  লাশ উদ্ধার

বারবার প্রস্রাবের চাপ, মেনে চলুন চিকিৎসকের পরামর্শ

প্রকাশিত সময় : ০৩:৩১:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১

অকারণেই বারবার প্রস্রাব পেলে কিংবা একটু পেটে চাপ পড়লেই যদি প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তবে তা একটি রোগ। লজ্জায় সমস্যা লুকিয়ে রাখবেন না। মূত্রথলির এই অসুখে সাবধান থাকার পরামর্শ ইউরোলজিস্টদের।

কিছুতেই প্রস্রাবের বেগ চাপতে পারেন না। অপ্রত্যাশিতভাবে বারবার এমন হতে থাকে। যার ঠেলায় কোথাও যেতে পারেন না। প্রথমে তেমন গা করেননি। ধীরে ধীরে সমস্যা বাড়তে শুরু করল। তখন চিকিৎসকের কাছে গেলে ধরা পড়ে, ওভারঅ্যাকটিভ ব্লাডার। খবর সংবাদ প্রতিদিনের।

কী এই সমস্যা?

এই অসুখে দেখা যায়, ব্লাডার বা মূত্রথলির পেশি প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে যায়, প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি কাজ করতে থাকে। ফলে একজনের বারবার প্রস্রাব পেতে থাকে। যেমন হয়েছিল তপতী দেবীর। অনেকের আবার মূত্রথলি থেকে মূত্র লিকও হতে পারে।

কেন হয়?

মূত্রথলির এই সমস্যার পিছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। কেন এমন হচ্ছে সেটা চিহ্নিত করা মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। অনেক রকম সমস্যা এর জন্য দায়ী হতে পারে।

ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন- মূত্রথলিতে বা কিডনিতে ইনফেকশন হলে তা থেকে এমন সমস্যা হতে পারে।

আউটফ্লো অবস্ট্রাকশন- বিশেষত পুরুষদের ক্ষেত্রে এমন হয়। প্রস্টেটের সমস্যা থেকে ব্লাডারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

নিউরো বা স্নায়ুজনিত সমস্যা- যাদের পারকিনসনস ডিজিজ, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিসের সমস্যা রয়েছে অথবা যাদের একবার স্ট্রোক হয়ে গিয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও এই ওভারঅ্যাকটিভ ব্লাডারের সমস্যা দেখা দেয়।

দায়ী কিছু ওষুধ- উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ (ল্যাসিক্স, ডাইয়ুরেটিক্স) টানা খেলে তা থেকে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া মদ্যপান কিংবা কফি বেশি পান করলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কাদের ভয় বেশি?

মহিলা কিংবা পুরুষ সকলের ক্ষেত্রেই এমন হতে পারে। বিশেষ করে, যে সকল মহিলার মেনোপজ হয়ে গিয়েছে তাদের রিস্ক অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি থাকে। আর পুরুষদের, যাদের প্রস্টেটের অসুখ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে মূত্রথলির এমন সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। লক্ষণ থাকলে ইউরিন কালচার, ব্লাডার ক্ল্যান, সিস্টোস্কোপি, ইউরো ডায়নামিক টেস্টিং করে ওভারঅ্যাকটিভ ব্লাডার রোগ নির্ণয় করা হয়।

শুরুতেই সাবধান হোন

১. মূত্রথলির এমন সমস্যা হলে শুরুতেই চিকিৎসকের কাছে যান।

২. যতটা সম্ভব কফি কিংবা ক্যাফিন জাতীয় পানীয় বর্জন করুন।

৩. কার্বোনেটেড ড্রিংক, মিষ্টি জাতীয় পানীয়, মশলাদার খাবার, অ্যাসিডিক ফুড ডায়েট থেকে বাদ দিন।

৪. ওজন বেশি থাকলে তা কমাতে হবে।

৫. পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ করুন।

৬. এতে পেলভিক বা মূত্রনালির পেশির জোর বৃদ্ধি পায়।

৭. সারাদিনে সময় ধরে বাথরুমে যাওয়ার অভ্যাস করুন।

৮. যাদের বারবার প্রস্রাব হয়ে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে, তারা একটা ডায়েরি মেনটেইন করুন। তাহলে চিকিৎসা করতে, সমস্যা চিহ্নিত করতে অনেক সুবিধা হবে।

৯. এইগুলি মেনে চলার পাশাপাশি সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবেই। বিশেষ কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলির দ্বারা এই অসুখ কিডনি কিংবা তোলা সম্ভব।