বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইভ্যালির রাসেল ও তার স্ত্রী ৩ দিনের রিমান্ডে

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের (রাসেলের স্ত্রী) বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলামের আদালত এ রিমান্ডের আদেশ দেন।

এর আগে এদিন আসামিদের দুপুর ২টার দিকে আদালতে হাজির করে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এরপর তাদের আদালতের এজলাসে তুলে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশার থানার উপ-পরিদর্শক ওয়াহিদুল ইসলাম। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিটন তাদের রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। পরে আদালত জামিনের আবেদনটি নাকচ করে দিয়ে আসামিদের প্রত্যেকের ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এরআগে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর আদালতে এ মামলাটির এজাহার আসে। এরপর ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নুর মামলার এজাহারটি গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ দিন ধার্য করেন। এর আগে গত বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে আরিফ বাকের নামে এক ব্যক্তি গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

এ মামলার এজাহার গ্রহনের পর গতকাল বিকাল ৪টার দিকে আসামি রাসেলের মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে ও তার স্ত্রী শামীমাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তাদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগে বলা হয়, ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে অভিযোগকারী আরিফ বাকের ও তার বন্ধুরা চলতি বছরের মে ও জুন মাসে কিছু পণ্য অর্ডার করেন। পণ্যের অর্ডার বাবদ বিকাশ, নগদ ও সিটি ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে সম্পূর্ণ পরিশোধ করেন তারা। পণ্যগুলো সাত থেকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে ডেলিভারির কথা ছিল। এছাড়া নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠান সমপরিমাণ টাকা ফেরত দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিল। কিন্তু ওই সময়সীমার মধ্যে পণ্যগুলো ডেলিভারি না পাওয়ায় বহুবার ইভ্যালির কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধিকে ফোন করা হয়। সর্বশেষ গত ৫ সেপ্টেম্বর যোগাযোগ করে অর্ডার করা পণ্যগুলো পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন বাদী ও তার বন্ধুরা।

একপর্যায়ে ইভ্যালি পণ্য সরবরাহ কিংবা টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়ার পর ৯ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির ধানমন্ডির অফিসে যান ভুক্তভোগীরা। এ সময় তারা ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সেখানে থাকা অফিসের কর্মীরা বাদী ও তার বন্ধুদের ওপর উত্তেজিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। একপর্যায়ে অফিসের অভ্যন্তরে থাকা ইভ্যালির সিইও রাসেল উত্তেজিত হয়ে তার কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে বাদীসহ অন্যদের ভয়ভীতি দেখিয়ে পণ্য অথবা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান।

এছাড়া গত ১৫ জুলাই দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ ইভ্যালির রাসেল ও শামীমা নাসরিনের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এরপর ২৫ আগস্ট তাদের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হিসাব চায় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এরপর সর্বশেষ গত ১৪ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জসহ ১০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত কমিটি।-ভোরের কাগজ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

ইভ্যালির রাসেল ও তার স্ত্রী ৩ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশিত সময় : ০৫:৩৩:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের (রাসেলের স্ত্রী) বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলামের আদালত এ রিমান্ডের আদেশ দেন।

এর আগে এদিন আসামিদের দুপুর ২টার দিকে আদালতে হাজির করে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এরপর তাদের আদালতের এজলাসে তুলে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশার থানার উপ-পরিদর্শক ওয়াহিদুল ইসলাম। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিটন তাদের রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। পরে আদালত জামিনের আবেদনটি নাকচ করে দিয়ে আসামিদের প্রত্যেকের ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এরআগে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর আদালতে এ মামলাটির এজাহার আসে। এরপর ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নুর মামলার এজাহারটি গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ দিন ধার্য করেন। এর আগে গত বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে আরিফ বাকের নামে এক ব্যক্তি গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

এ মামলার এজাহার গ্রহনের পর গতকাল বিকাল ৪টার দিকে আসামি রাসেলের মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে ও তার স্ত্রী শামীমাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তাদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগে বলা হয়, ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে অভিযোগকারী আরিফ বাকের ও তার বন্ধুরা চলতি বছরের মে ও জুন মাসে কিছু পণ্য অর্ডার করেন। পণ্যের অর্ডার বাবদ বিকাশ, নগদ ও সিটি ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে সম্পূর্ণ পরিশোধ করেন তারা। পণ্যগুলো সাত থেকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে ডেলিভারির কথা ছিল। এছাড়া নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠান সমপরিমাণ টাকা ফেরত দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিল। কিন্তু ওই সময়সীমার মধ্যে পণ্যগুলো ডেলিভারি না পাওয়ায় বহুবার ইভ্যালির কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধিকে ফোন করা হয়। সর্বশেষ গত ৫ সেপ্টেম্বর যোগাযোগ করে অর্ডার করা পণ্যগুলো পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন বাদী ও তার বন্ধুরা।

একপর্যায়ে ইভ্যালি পণ্য সরবরাহ কিংবা টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়ার পর ৯ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির ধানমন্ডির অফিসে যান ভুক্তভোগীরা। এ সময় তারা ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সেখানে থাকা অফিসের কর্মীরা বাদী ও তার বন্ধুদের ওপর উত্তেজিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। একপর্যায়ে অফিসের অভ্যন্তরে থাকা ইভ্যালির সিইও রাসেল উত্তেজিত হয়ে তার কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে বাদীসহ অন্যদের ভয়ভীতি দেখিয়ে পণ্য অথবা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান।

এছাড়া গত ১৫ জুলাই দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ ইভ্যালির রাসেল ও শামীমা নাসরিনের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এরপর ২৫ আগস্ট তাদের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হিসাব চায় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এরপর সর্বশেষ গত ১৪ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জসহ ১০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত কমিটি।-ভোরের কাগজ