বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জেনে নিন বিয়ের আগে যেসব স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি

বিয়ের মাধ্যমে দু’জনের মধ্যে আত্মার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। তবে দাম্পত্য বিভিন্ন কারণে সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা কিংবা রোগব্যাধির কারণে অনেক সময় বিয়ের পর দু’জনের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি হয়।

বিয়ের আগেই যদি কয়েকটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা যায় তাহলে আর দ্বিধা-দন্দ্বের মধ্যে থাকতে হয় না। এ কারণে বিয়ের আগে হবু বর ও কনের কয়েকটি মেডিকেল পরীক্ষা করা জরুরি। জেনে নিন কোন পরীক্ষাগুলো করবেন-

এইচআইভি

বিয়ের আগে হবু বর ও কনের এইচআইভি পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে রক্ত, শরীরের সিরাম নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষা করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতা রোধকারী ভাইরাসের উপস্থিতি জানা যায়।

এইচআইভি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এই ভাইরাস শরীরে থাকলে তার থেকে এইডস পর্যন্ত হতে পারে। অনেকেই আগে থেকে শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি টের পান না।

ফলে ওই ব্যক্তি যৌন সম্পর্ক করলে তা সঙ্গীর শরীরে এমনকি গর্ভের সন্তানেরও হতে পারে এইডস। যদি হবু বর বা কনের কারও এইচআইভি সংক্রমণ থাকলে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও কয়েকবার ভাবা উচিত।

নারীর ওভারি পরীক্ষা

বর্তমানে অনেক নারীই বেশি বয়সে বিয়ে করেন। আবার অনেক নারীদের জীবনযাত্রাতেও এসেছে পরিবর্তন। অনেকেই এখন ধূমপান, মদ্যপান বা অন্যান্য নেশায় আসক্ত। তাই বিয়ের আগে নারীরর ওভারি টেস্ট করানো একান্ত প্রয়োজন।

ওভারিতে সমস্যা থাকলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিম্বাণু তৈরির পরিমাণ কমতে শুরু থাকে। তাই বিয়ের পর সন্তান ধারণে সমস্যা হতে পারে।

বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষা

ভবিষ্যতে সন্তান হবে কি না তা জানতে হবু বর ও কনে দু’জনারই বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। এই পরীক্ষা করলে পুরুষের শুক্রাণুর স্থিতি ও কাউন্ট কতটা আছে তা জানা যায়। সময় থাকতে থাকতে এর চিকিৎসাও করা যায়।

জেনেটিক টেস্ট

বিয়ের আগে হবু বর ও কনে উভয়েরই জেনেটিক পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। এই পরীক্ষা করলে জানা যাবে আপনার হবু সঙ্গীর কোনো জিনঘটিত সমস্যা আছে কি না।

এসটিডি পরীক্ষা

নারী-পুরুষ উভয়েরই এসটিডি বা যৌন রোগের পরীক্ষা করা উচিত। বিয়ের আগে একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক থাকলে এই পরীক্ষার মাধ্যমে তা জানা যায়।

রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা

হবু বর ও কনের রক্ত পরীক্ষা করানো জরুরি। কারণ স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ একে অপরের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকলে গর্ভাবস্থায় সমস্যা দেখা দেয়। এ কারণে বিয়ের আগে দু’জনেরই আরএইচ ফ্যাক্টর একই হওয়া দরকার।

ব্লাড ডিসঅর্ডার পরীক্ষা

বিয়ের আগে নারীর ব্লাড ডিসঅর্ডার পরীক্ষা করানো উচিত। এই পরীক্ষা করালে জানা যাবে হবু কনে রক্তাল্পতায় ভুগছেন কি না। কারণ সন্তান ধারণের জন্য শরীরে রক্তের পরিমাণ ঠিক থাকা দরকার।

থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা

বিয়ের আগে হবু বর ও কনের থ্যালাসেমিয়ার পরীক্ষাও জরুরি। দু’জনের মধ্যে একজনের শরীরেও যদি এই রোগ থাকে তাহলে সন্তানও এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা

একটি সুখী দাম্পত্য জীবন গড়তে দু’জনকে মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। বর্তমানে অনেকেই মানসিক নানা সমস্যায় ভোগেন।

কেউ হয়তো অতিরিক্ত রাগ করেন, আবার কারও সন্দেহপ্রবণতা বেশি, হঠাৎ হতাশ হয়ে পড়া, অবসন্নতা ইত্যাদি সমস্যা মানসিক রোগের কারণ হতে পারে।

তাই বিয়ের পর ঝামেলা এড়াতে আগেই সঙ্গীর মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানুন পরীক্ষার মাধ্যমে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জেনে নিন বিয়ের আগে যেসব স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি

প্রকাশিত সময় : ০৯:০৭:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

বিয়ের মাধ্যমে দু’জনের মধ্যে আত্মার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। তবে দাম্পত্য বিভিন্ন কারণে সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা কিংবা রোগব্যাধির কারণে অনেক সময় বিয়ের পর দু’জনের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি হয়।

বিয়ের আগেই যদি কয়েকটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা যায় তাহলে আর দ্বিধা-দন্দ্বের মধ্যে থাকতে হয় না। এ কারণে বিয়ের আগে হবু বর ও কনের কয়েকটি মেডিকেল পরীক্ষা করা জরুরি। জেনে নিন কোন পরীক্ষাগুলো করবেন-

এইচআইভি

বিয়ের আগে হবু বর ও কনের এইচআইভি পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে রক্ত, শরীরের সিরাম নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষা করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতা রোধকারী ভাইরাসের উপস্থিতি জানা যায়।

এইচআইভি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এই ভাইরাস শরীরে থাকলে তার থেকে এইডস পর্যন্ত হতে পারে। অনেকেই আগে থেকে শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি টের পান না।

ফলে ওই ব্যক্তি যৌন সম্পর্ক করলে তা সঙ্গীর শরীরে এমনকি গর্ভের সন্তানেরও হতে পারে এইডস। যদি হবু বর বা কনের কারও এইচআইভি সংক্রমণ থাকলে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও কয়েকবার ভাবা উচিত।

নারীর ওভারি পরীক্ষা

বর্তমানে অনেক নারীই বেশি বয়সে বিয়ে করেন। আবার অনেক নারীদের জীবনযাত্রাতেও এসেছে পরিবর্তন। অনেকেই এখন ধূমপান, মদ্যপান বা অন্যান্য নেশায় আসক্ত। তাই বিয়ের আগে নারীরর ওভারি টেস্ট করানো একান্ত প্রয়োজন।

ওভারিতে সমস্যা থাকলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিম্বাণু তৈরির পরিমাণ কমতে শুরু থাকে। তাই বিয়ের পর সন্তান ধারণে সমস্যা হতে পারে।

বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষা

ভবিষ্যতে সন্তান হবে কি না তা জানতে হবু বর ও কনে দু’জনারই বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। এই পরীক্ষা করলে পুরুষের শুক্রাণুর স্থিতি ও কাউন্ট কতটা আছে তা জানা যায়। সময় থাকতে থাকতে এর চিকিৎসাও করা যায়।

জেনেটিক টেস্ট

বিয়ের আগে হবু বর ও কনে উভয়েরই জেনেটিক পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। এই পরীক্ষা করলে জানা যাবে আপনার হবু সঙ্গীর কোনো জিনঘটিত সমস্যা আছে কি না।

এসটিডি পরীক্ষা

নারী-পুরুষ উভয়েরই এসটিডি বা যৌন রোগের পরীক্ষা করা উচিত। বিয়ের আগে একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক থাকলে এই পরীক্ষার মাধ্যমে তা জানা যায়।

রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা

হবু বর ও কনের রক্ত পরীক্ষা করানো জরুরি। কারণ স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ একে অপরের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকলে গর্ভাবস্থায় সমস্যা দেখা দেয়। এ কারণে বিয়ের আগে দু’জনেরই আরএইচ ফ্যাক্টর একই হওয়া দরকার।

ব্লাড ডিসঅর্ডার পরীক্ষা

বিয়ের আগে নারীর ব্লাড ডিসঅর্ডার পরীক্ষা করানো উচিত। এই পরীক্ষা করালে জানা যাবে হবু কনে রক্তাল্পতায় ভুগছেন কি না। কারণ সন্তান ধারণের জন্য শরীরে রক্তের পরিমাণ ঠিক থাকা দরকার।

থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা

বিয়ের আগে হবু বর ও কনের থ্যালাসেমিয়ার পরীক্ষাও জরুরি। দু’জনের মধ্যে একজনের শরীরেও যদি এই রোগ থাকে তাহলে সন্তানও এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা

একটি সুখী দাম্পত্য জীবন গড়তে দু’জনকে মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। বর্তমানে অনেকেই মানসিক নানা সমস্যায় ভোগেন।

কেউ হয়তো অতিরিক্ত রাগ করেন, আবার কারও সন্দেহপ্রবণতা বেশি, হঠাৎ হতাশ হয়ে পড়া, অবসন্নতা ইত্যাদি সমস্যা মানসিক রোগের কারণ হতে পারে।

তাই বিয়ের পর ঝামেলা এড়াতে আগেই সঙ্গীর মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানুন পরীক্ষার মাধ্যমে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া