বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লিপস্টিক যখন মারাত্মক রোগের কারণ

যদি সাজতে ভালোবাসেন তবে আপনার সংগ্রহে অনেকগুলো লিপস্টিক থাকা খুব স্বাভাবিক। বিভিন্ন রং এবং ধরনের লিপস্টিক সংগ্রহ করতে পছন্দ করে মেয়েরা। পোশাকের সঙ্গে রং মিলিয়েও লিপস্টিক ব্যবহার করে থাকেন অনেকে। লিপস্টিক অনেকগুলো হলে সবগুলো তো আর প্রতিদিন ব্যবহার করা হয় না। আর দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে থাকলে একটা সময় লিপস্টিকের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যেতে পারে।

লিপস্টিকের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও সেদিকে খেয়াল থাকে না অনেকের। তখন সেই মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিক ব্যবহার করেন। আপনি যদি এমনটা করে থাকেন তবে বিপদ খুব কাছেই। কারণ রঙিন এই লিপস্টিক আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে যদি সেটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়।

মহামারী চলাকালীন বাড়িতে বেশিরভাগ সময় থাকার কারণে লিপস্টিক ব্যবহার করার পরিমাণ অনেক কমে গিয়েছিল। স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে মেয়েরা তাদের প্রিয় শেডের লিপস্টিক ব্যবহার করতে পেরে খুশি নিশ্চয়ই! অন্যান্য মেকআপ সামগ্রীর মতো লিপস্টিকেরও একটি শেলফ লাইফ রয়েছে। ইতিমধ্যে যদি আপনার লিপস্টিকের মেয়াদ শেষ হয়ে যায় তবে সেটি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

পুরানো লিপস্টিক সনাক্ত করবেন যেভাবে

আপনি যদি আপনার সংগ্রহে থাকা লিপস্টিকগুলো বছরের পর বছর ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেন, তাহলে আপনাকে থামতে হবে। একটি ভাল ব্র্যান্ডের লিপস্টিক প্রায় ১২-১৮ মাস স্থায়ী হয়। আপনার লিপস্টিক ব্যবহার করার উপযোগী আছে কি না তা খুঁজে বের করার সহজ উপায় হলো-

* মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ পরীক্ষা করতে পারেন।

* গন্ধ লক্ষ করুন। এটি খুব পুরানো হলে এটি অদ্ভুত গন্ধ হতে পারে।

* ঠোঁটকে আর্দ্র করে কি না এবং সহজে ঠোঁটে লেগে যায় কিনা তা পরীক্ষা করুন।

আপনি যদি এগুলো লক্ষ না করে পুরানো লিপস্টিক ব্যবহার করেন তবে যা ঘটতে পারে :

মুখের চারপাশে চুলকানি

মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিকগুলোতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা মুখের ভেতরে এবং চারপাশে চুলকানির কারণ হতে পারে। লিপস্টিকে ল্যানোলিন রয়েছে। এটি সহজেই শুষ্কতা, চুলকানি এবং ব্যথার মতো অ্যালার্জির সৃষ্টি করতে পারে।

কিডনি ফেইলিওর, রক্তস্বল্পতা এবং মস্তিষ্কের ক্ষতি

মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিকে উপস্থিত ল্যানোনিনের শক্তিশালী শোষণক্ষমতা রয়েছে। এটি বাতাস থেকে ধুলো, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ভারী ধাতু শোষণ করতে পারে, যা ঠোঁট দ্বারা শোষিত হতে পারে। আপনি যখন লিপস্টিক লাগিয়ে খাবার খান এবং পান করেন, তখন এগুলো শরীরে প্রবেশ করে এবং আপনাকে অসুস্থ করে দিতে পারে। লিপস্টিকেও প্রচুর সীসা এবং ক্যাডমিয়াম থাকে। মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিক ব্যবহার করলে সীসার বিষক্রিয়া হতে পারে এবং রেনাল ফেইলিওর, অ্যানিমিয়া, মস্তিষ্কের ক্ষতি এবং মস্তিষ্কের নিউরোপ্যাথি হতে পারে।

ব্রেস্ট টিউমার

প্রিজারভেটিভ এবং বিএইচএ সহ ক্ষতিকারক পদার্থ থাকতে পারে মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিকে। মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিক ব্যবহার করলে স্তনে টিউমার হতে পারে। মেয়াদ উত্তীর্ণ লিপস্টিক ব্যবহারের পর কোনো সমস্যা অনুভব করলে অবশ্যই একজন ডার্মালোজিস্টের পরামর্শ নিন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

লিপস্টিক যখন মারাত্মক রোগের কারণ

প্রকাশিত সময় : ০৩:২১:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ নভেম্বর ২০২১

যদি সাজতে ভালোবাসেন তবে আপনার সংগ্রহে অনেকগুলো লিপস্টিক থাকা খুব স্বাভাবিক। বিভিন্ন রং এবং ধরনের লিপস্টিক সংগ্রহ করতে পছন্দ করে মেয়েরা। পোশাকের সঙ্গে রং মিলিয়েও লিপস্টিক ব্যবহার করে থাকেন অনেকে। লিপস্টিক অনেকগুলো হলে সবগুলো তো আর প্রতিদিন ব্যবহার করা হয় না। আর দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে থাকলে একটা সময় লিপস্টিকের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যেতে পারে।

লিপস্টিকের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও সেদিকে খেয়াল থাকে না অনেকের। তখন সেই মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিক ব্যবহার করেন। আপনি যদি এমনটা করে থাকেন তবে বিপদ খুব কাছেই। কারণ রঙিন এই লিপস্টিক আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে যদি সেটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়।

মহামারী চলাকালীন বাড়িতে বেশিরভাগ সময় থাকার কারণে লিপস্টিক ব্যবহার করার পরিমাণ অনেক কমে গিয়েছিল। স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে মেয়েরা তাদের প্রিয় শেডের লিপস্টিক ব্যবহার করতে পেরে খুশি নিশ্চয়ই! অন্যান্য মেকআপ সামগ্রীর মতো লিপস্টিকেরও একটি শেলফ লাইফ রয়েছে। ইতিমধ্যে যদি আপনার লিপস্টিকের মেয়াদ শেষ হয়ে যায় তবে সেটি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

পুরানো লিপস্টিক সনাক্ত করবেন যেভাবে

আপনি যদি আপনার সংগ্রহে থাকা লিপস্টিকগুলো বছরের পর বছর ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেন, তাহলে আপনাকে থামতে হবে। একটি ভাল ব্র্যান্ডের লিপস্টিক প্রায় ১২-১৮ মাস স্থায়ী হয়। আপনার লিপস্টিক ব্যবহার করার উপযোগী আছে কি না তা খুঁজে বের করার সহজ উপায় হলো-

* মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ পরীক্ষা করতে পারেন।

* গন্ধ লক্ষ করুন। এটি খুব পুরানো হলে এটি অদ্ভুত গন্ধ হতে পারে।

* ঠোঁটকে আর্দ্র করে কি না এবং সহজে ঠোঁটে লেগে যায় কিনা তা পরীক্ষা করুন।

আপনি যদি এগুলো লক্ষ না করে পুরানো লিপস্টিক ব্যবহার করেন তবে যা ঘটতে পারে :

মুখের চারপাশে চুলকানি

মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিকগুলোতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা মুখের ভেতরে এবং চারপাশে চুলকানির কারণ হতে পারে। লিপস্টিকে ল্যানোলিন রয়েছে। এটি সহজেই শুষ্কতা, চুলকানি এবং ব্যথার মতো অ্যালার্জির সৃষ্টি করতে পারে।

কিডনি ফেইলিওর, রক্তস্বল্পতা এবং মস্তিষ্কের ক্ষতি

মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিকে উপস্থিত ল্যানোনিনের শক্তিশালী শোষণক্ষমতা রয়েছে। এটি বাতাস থেকে ধুলো, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ভারী ধাতু শোষণ করতে পারে, যা ঠোঁট দ্বারা শোষিত হতে পারে। আপনি যখন লিপস্টিক লাগিয়ে খাবার খান এবং পান করেন, তখন এগুলো শরীরে প্রবেশ করে এবং আপনাকে অসুস্থ করে দিতে পারে। লিপস্টিকেও প্রচুর সীসা এবং ক্যাডমিয়াম থাকে। মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিক ব্যবহার করলে সীসার বিষক্রিয়া হতে পারে এবং রেনাল ফেইলিওর, অ্যানিমিয়া, মস্তিষ্কের ক্ষতি এবং মস্তিষ্কের নিউরোপ্যাথি হতে পারে।

ব্রেস্ট টিউমার

প্রিজারভেটিভ এবং বিএইচএ সহ ক্ষতিকারক পদার্থ থাকতে পারে মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিকে। মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিক ব্যবহার করলে স্তনে টিউমার হতে পারে। মেয়াদ উত্তীর্ণ লিপস্টিক ব্যবহারের পর কোনো সমস্যা অনুভব করলে অবশ্যই একজন ডার্মালোজিস্টের পরামর্শ নিন।