বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এই গরমের দিনে সানস্ক্রিন কয়বার মাখবেন

  • শুধু গরম নয়, রোদ, বৃষ্টি কিংবা কনকনে ঠান্ডা আবহাওয়াতেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত
  • সারা দিনে দুই ঘণ্টা পর পর সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে, বাইরে বের হলেই ব্যাগে সানস্ক্রিন রাখুনগরমের দিনে রোদের তাপদাহ চলতে থাকে। ঘর থেকে বেরুলেই প্রখর রোদ। ছাতা, চশমা, স্কার্ফ ইত্যাদি নানা অনুষঙ্গেও ত্বক ভালো রাখা মুশকিল হয়ে পড়ছে। এরমধ্যে ঘর থেকে সানস্ক্রিন ছাড়া বের হওয়ার কথাতো ভাবাই যায় না।

    তবে যে সানস্ক্রিন আমরা দিনের শুরুতে একবার ব্যবহার করছি তা কি সারাদিনের ত্বকের সুরক্ষায় যথেষ্ট? চিকিৎসকরা বলেন, ত্বকের যত্নে সব সময় ব্যাগে সানস্ক্রিন রাখা জরুরি।

    সানস্ক্রিনের উপকারিতা

    সানস্ক্রিন ব্যবহার নিয়ে অনেকের মধ্যেই অবহেলা থাকে, অথচ ত্বক ভাল রাখতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা ভীষণ জরুরি। শুধু মেয়েরাই নয়, ছেলেদেরও মেনে চলতে হবে এই নিয়ম। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ইউভিএ এবং ইউভিবি-র ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করাই সানস্ক্রিনের মূল কাজ। সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে ত্বকের ক্যানসারের ঝুঁকি কমে, এ ছাড়া ত্বকে অকালে বয়সের ছাপও পড়ে না।

    গরমে সানস্ক্রিনের ব্যবহার

    ১. বেশীরভাগ মানুষই কেবল গরমের সময় রোদে বেরোনোর আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন। সানস্ক্রিন কেবল গরমের প্রসাধনী নয়। তাই রোদ থাকুক কিংবা বৃষ্টি, অথবা কনকনে ঠান্ডা— সানস্ক্রিন সব সময়েই ব্যবহার করা উচিত।

    ২. কেবল মুখে সানস্ক্রিন লাগালে চলবে না। গলা, কান, হাত ও পা, অর্থাৎ, শরীরের খোলা অংশেও কিন্তু সানস্ক্রিন লাগানো জরুরি। এছাড়া রান্না করার সময়ে আগুনের তাপেও ত্বকের ক্ষতি হয়। তাই ত্বক ভাল রাখতে বাড়িতেও সানস্ক্রিন ব্যবহার প্রয়োজন।

    ৩. বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়ে সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পর অনেকেই আর ব্যবহার করেন না। রোদে বেরোলেই ঘামের জন্য সানস্ক্রিন কিছুক্ষণের মধ্যেই উঠে যায়। সারা দিনে দুই ঘণ্টা পর পর সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। বাইরে বের হলেই ব্যাগে সানস্ক্রিন রাখুন। এক বার সানস্ক্রিন লাগিয়ে বাড়ি থেকে বেরোনোর দু’ঘণ্টা পর ওয়েট টিস্যু দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিয়ে আবার সানস্ক্রিন মাখতে হবে।

    ৪. সানস্ক্রিন মাখার সময়ে একটু বেশি পরিমাণেই ব্যবহার করুন। হাতে একটু সময় রেখে পুরোটা ত্বকের সঙ্গে মিশে যেতে দিন। প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বেরোনোর আধ ঘণ্টা আগেই সানস্ক্রিন মেখে নিন। তা হলে তা ত্বকে ভাল ভাবে মিশে যাবে।

    সানস্ক্রিনের ক্ষেত্রে এসপিএফের গুরুত্ব

    সানস্ক্রিনের বাক্সের গায়ে লেখা থাকে এসপিএফ শব্দটি। কোনও বাক্সের গায়ে লেখা থাকে এসপিএফ ৩০, তো কোনও বাক্সের গায়ে এসপিএফ ৫০।

    এই এসপিএফ-এর অর্থ কী? এসপিএফ মানে ‘সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর’।

    নির্দিষ্ট সানস্ক্রিনটি কত ক্ষণ আপনার ত্বককে সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করবে, তা-ই বোঝানো হয় এসপিএফ-এর মাধ্যমে। চিকিৎসকদের তথ্যমতে, এসপিএফ ৫০ সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির হাত থেকে ত্বককে ৯৪.৫ শতাংশ সুরক্ষা দেয়, অন্য দিকে এসপিএফ ৩০ সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির হাত থেকে ত্বককে ৯২ শতাংশ সুরক্ষা দেয়। তাই দুটির মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই।

    আমাদের দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী এসপিএফ ৩০ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করলেই যথেষ্ট। ত্বকে কোনও রকম সমস্যা না থাকলে জেল বেস্ড সানস্ক্রিন ব্যবহার করা সবচেয়ে ভাল। এতে ত্বক ঘামে কম। তবে ত্বকে কোনও রকম সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

    যেসব বিষয়ে লক্ষ্য রাখা উচিত

    কেবল দামি সানস্ক্রিন কিনলেই হল না, কেনার আগে কোন বিষয়ে নজর দিতেই হবে তা এখানে দেওয়া হল,

    ১. এসপিএফ-এর মাত্রা যেন ৩০ অথবা তার থেকে বেশি থাকে। এর নিচে হলে রোদ থেকে ত্বক রক্ষা পাবেনা।

    ২. এই গরমে ফুল কভারেজ দেবে, ঘাম প্রতিরোধ করবে আর ওয়াটার রেজ়িস্ট্যান্ট হবে, এমন সানস্ক্রিন বাছাই করা উচিত।

    ৩.  অতিবেগনি রশ্মি মূলত তিন ধরনের হয় ইউভিএ, ইউভিবি ও ইউভিসি। আপনি যে সানস্ক্রিনটি কিনছেন, সেটি ইউভিএ আর ইউভিবি-এই দু’টির বিরুদ্ধেই সুরক্ষা দিতে পারবে কি না, তা যাচাই করে কিনুন। সানস্ক্রিনের বাক্সের গায়ে ইউভিএ আর ইউভিবি-এর উল্লেখ আছে কিনা তা দেখে নিতে ভুলবেন না।

    ৪. সানস্ক্রিনের অতিবেগনি রশ্মির বিরুদ্ধে প্রোটেকশন গ্রেড অর্থাৎ, পিএ লেভেলের দিকে নজর দিতে হবে। পিএ লেভেলের মাধ্যমে সানস্ক্রিনটি ইউভিএ-র বিরুদ্ধে কত খানি সুরক্ষা দিতে পারবে, তা নির্ধারণ করা হয়। পিএ লেভেল ৩ হলে সেই সানস্ক্রিনটি বেশ ভাল।

    ৫. তবে কেবল সানস্ক্রিন মাখলেই হবে না, গরমে ত্বক রক্ষা করতে ছাতা, টুপি, স্কার্ফ, রোদচশমারও প্রয়োজন আছে। ব্যাগে সানস্ক্রিনের সঙ্গে সেইগুলিও রাখতে ভুলবেন না যেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

এই গরমের দিনে সানস্ক্রিন কয়বার মাখবেন

প্রকাশিত সময় : ১১:০৩:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
  • শুধু গরম নয়, রোদ, বৃষ্টি কিংবা কনকনে ঠান্ডা আবহাওয়াতেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত
  • সারা দিনে দুই ঘণ্টা পর পর সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে, বাইরে বের হলেই ব্যাগে সানস্ক্রিন রাখুনগরমের দিনে রোদের তাপদাহ চলতে থাকে। ঘর থেকে বেরুলেই প্রখর রোদ। ছাতা, চশমা, স্কার্ফ ইত্যাদি নানা অনুষঙ্গেও ত্বক ভালো রাখা মুশকিল হয়ে পড়ছে। এরমধ্যে ঘর থেকে সানস্ক্রিন ছাড়া বের হওয়ার কথাতো ভাবাই যায় না।

    তবে যে সানস্ক্রিন আমরা দিনের শুরুতে একবার ব্যবহার করছি তা কি সারাদিনের ত্বকের সুরক্ষায় যথেষ্ট? চিকিৎসকরা বলেন, ত্বকের যত্নে সব সময় ব্যাগে সানস্ক্রিন রাখা জরুরি।

    সানস্ক্রিনের উপকারিতা

    সানস্ক্রিন ব্যবহার নিয়ে অনেকের মধ্যেই অবহেলা থাকে, অথচ ত্বক ভাল রাখতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা ভীষণ জরুরি। শুধু মেয়েরাই নয়, ছেলেদেরও মেনে চলতে হবে এই নিয়ম। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ইউভিএ এবং ইউভিবি-র ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করাই সানস্ক্রিনের মূল কাজ। সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে ত্বকের ক্যানসারের ঝুঁকি কমে, এ ছাড়া ত্বকে অকালে বয়সের ছাপও পড়ে না।

    গরমে সানস্ক্রিনের ব্যবহার

    ১. বেশীরভাগ মানুষই কেবল গরমের সময় রোদে বেরোনোর আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন। সানস্ক্রিন কেবল গরমের প্রসাধনী নয়। তাই রোদ থাকুক কিংবা বৃষ্টি, অথবা কনকনে ঠান্ডা— সানস্ক্রিন সব সময়েই ব্যবহার করা উচিত।

    ২. কেবল মুখে সানস্ক্রিন লাগালে চলবে না। গলা, কান, হাত ও পা, অর্থাৎ, শরীরের খোলা অংশেও কিন্তু সানস্ক্রিন লাগানো জরুরি। এছাড়া রান্না করার সময়ে আগুনের তাপেও ত্বকের ক্ষতি হয়। তাই ত্বক ভাল রাখতে বাড়িতেও সানস্ক্রিন ব্যবহার প্রয়োজন।

    ৩. বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়ে সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পর অনেকেই আর ব্যবহার করেন না। রোদে বেরোলেই ঘামের জন্য সানস্ক্রিন কিছুক্ষণের মধ্যেই উঠে যায়। সারা দিনে দুই ঘণ্টা পর পর সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। বাইরে বের হলেই ব্যাগে সানস্ক্রিন রাখুন। এক বার সানস্ক্রিন লাগিয়ে বাড়ি থেকে বেরোনোর দু’ঘণ্টা পর ওয়েট টিস্যু দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিয়ে আবার সানস্ক্রিন মাখতে হবে।

    ৪. সানস্ক্রিন মাখার সময়ে একটু বেশি পরিমাণেই ব্যবহার করুন। হাতে একটু সময় রেখে পুরোটা ত্বকের সঙ্গে মিশে যেতে দিন। প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বেরোনোর আধ ঘণ্টা আগেই সানস্ক্রিন মেখে নিন। তা হলে তা ত্বকে ভাল ভাবে মিশে যাবে।

    সানস্ক্রিনের ক্ষেত্রে এসপিএফের গুরুত্ব

    সানস্ক্রিনের বাক্সের গায়ে লেখা থাকে এসপিএফ শব্দটি। কোনও বাক্সের গায়ে লেখা থাকে এসপিএফ ৩০, তো কোনও বাক্সের গায়ে এসপিএফ ৫০।

    এই এসপিএফ-এর অর্থ কী? এসপিএফ মানে ‘সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর’।

    নির্দিষ্ট সানস্ক্রিনটি কত ক্ষণ আপনার ত্বককে সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করবে, তা-ই বোঝানো হয় এসপিএফ-এর মাধ্যমে। চিকিৎসকদের তথ্যমতে, এসপিএফ ৫০ সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির হাত থেকে ত্বককে ৯৪.৫ শতাংশ সুরক্ষা দেয়, অন্য দিকে এসপিএফ ৩০ সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির হাত থেকে ত্বককে ৯২ শতাংশ সুরক্ষা দেয়। তাই দুটির মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই।

    আমাদের দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী এসপিএফ ৩০ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করলেই যথেষ্ট। ত্বকে কোনও রকম সমস্যা না থাকলে জেল বেস্ড সানস্ক্রিন ব্যবহার করা সবচেয়ে ভাল। এতে ত্বক ঘামে কম। তবে ত্বকে কোনও রকম সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

    যেসব বিষয়ে লক্ষ্য রাখা উচিত

    কেবল দামি সানস্ক্রিন কিনলেই হল না, কেনার আগে কোন বিষয়ে নজর দিতেই হবে তা এখানে দেওয়া হল,

    ১. এসপিএফ-এর মাত্রা যেন ৩০ অথবা তার থেকে বেশি থাকে। এর নিচে হলে রোদ থেকে ত্বক রক্ষা পাবেনা।

    ২. এই গরমে ফুল কভারেজ দেবে, ঘাম প্রতিরোধ করবে আর ওয়াটার রেজ়িস্ট্যান্ট হবে, এমন সানস্ক্রিন বাছাই করা উচিত।

    ৩.  অতিবেগনি রশ্মি মূলত তিন ধরনের হয় ইউভিএ, ইউভিবি ও ইউভিসি। আপনি যে সানস্ক্রিনটি কিনছেন, সেটি ইউভিএ আর ইউভিবি-এই দু’টির বিরুদ্ধেই সুরক্ষা দিতে পারবে কি না, তা যাচাই করে কিনুন। সানস্ক্রিনের বাক্সের গায়ে ইউভিএ আর ইউভিবি-এর উল্লেখ আছে কিনা তা দেখে নিতে ভুলবেন না।

    ৪. সানস্ক্রিনের অতিবেগনি রশ্মির বিরুদ্ধে প্রোটেকশন গ্রেড অর্থাৎ, পিএ লেভেলের দিকে নজর দিতে হবে। পিএ লেভেলের মাধ্যমে সানস্ক্রিনটি ইউভিএ-র বিরুদ্ধে কত খানি সুরক্ষা দিতে পারবে, তা নির্ধারণ করা হয়। পিএ লেভেল ৩ হলে সেই সানস্ক্রিনটি বেশ ভাল।

    ৫. তবে কেবল সানস্ক্রিন মাখলেই হবে না, গরমে ত্বক রক্ষা করতে ছাতা, টুপি, স্কার্ফ, রোদচশমারও প্রয়োজন আছে। ব্যাগে সানস্ক্রিনের সঙ্গে সেইগুলিও রাখতে ভুলবেন না যেন।