বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মন খারাপ হলেই মিষ্টি খেতে মন চায়?

  • বেশীরভাগ মানুষেরই মন খারাপ হলে মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বেড়ে যায় দ্বিগুণ
  • বেশি মিষ্টি খেলেও কিন্তু অবসাদ, উদ্বেগ বেড়ে যেতে পারে বলছেন চিকিৎসকরা
  • আমাদের আবেগের সঙ্গে খাবারের নিবির যোগ রয়েছে। অনেক সময় মন খারাপ হলে বা অবসন্ন বোধে নির্দিষ্ট কিছু খেতে মন চায় আবার অনেক সময় কিছু খেলে মন খারাপ ধুয়ে মুছে যায়।

    আমাদের প্রায়ই মিষ্টি খাবার খাওয়ার তাগিদ দেখা দেয়। চকলেট, কেক, পেস্ট্রি দেখলেই খেতে মন চায়। বিশেষ করে বেশীরভাগ মানুষেরই মন খারাপ হলে মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বেড়ে যায় দ্বিগুণ।

    কেন এমন হয়? আর আসলেই কি মন খারাপ থাকলে কি মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে?

    মন খারাপ হলেই মিষ্টি খেতে মন চায়?

    গবেষণা ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “এই ধরনের উপসর্গকে ‘কার্বোহাইড্রেট ক্রেভিং’ বলা হয়।

    সাধারণত মন খারাপ বা ডিপ্রেশনের অনেকগুলি স্তর আছে। এই উপসর্গ অ্যাটিপিক্যাল ডিপ্রেশনের। এই ধরনের ডিপ্রেশনের কোনও কারণ থাকে না। এমনি এমনিই মন খারাপ করে। তখনই মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।

    তবে, শুধু একাকিত্ব বা মন খারাপ থেকে মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে, এ কথা ঠিক নয়। উদ্বেগবোধ বাড়লেও এই ধরনের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

    মনোবিদদের তথ্যমতে, “অনেক সময় অনলাইন গেম, ধূমপানের মতো মিষ্টি খাওয়াটাও এক প্রকার নেশার মত হয়ে দাঁড়ায়। শুধু বড়দেরই নয়, এই সমস্যা হতে পারে ছোটদেরও।

    তাই এ ধরনের সমস্যা হলে মনোবিদরা মিষ্টি জাতীয় খাবার কম খেতে পরামর্শ দেন। শারীরিক ব্যায়াম বৃদ্ধির পাশাপাশি শিশুদের বাড়ির বাইরে গিয়ে খেলাধুলো করতে বলা হয়।

    মিষ্টি বেশি খেলে যা হয়

    মন খারাপ থাকলে যেমন মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে, তেমনই বেশি মিষ্টি খেলেও কিন্তু অবসাদ, উদ্বেগ বেড়ে যেতে পারে।

    এ ছাড়াও বেশি মিষ্টি স্বাস্থ্যের জন্য নানাভাবে ক্ষতিকর হতে পারে। সবচেয়ে বড় বিপদ হল রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া। সময়মতো নিয়ন্ত্রণ না করা হলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়তে পারে। এর পাশাপাশি, স্থূলতা, হৃদরোগ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাও বেড়ে যায়।

    আর তাই মন খারাপ হলেই মিষ্টি খাওয়া বাদ দিতে হবে। এক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য এবং ডায়েট— একসঙ্গে এই দুই বিষয়ের উপর নজর দিতে হবে।

    মিষ্টি খাবারের প্রতি আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করবেন কীভাবে?

    ১. শরীরে পানির অভাব হতে দেওয়া যাবে না। পুষ্টিবিদদের মতে, অনেক সময়ে ডিহাইড্রেশন থেকেও মিষ্টি খাবার খাওয়ার ঝোঁক বেড়ে যেতে পারে। তবে, কৃত্রিম মিষ্টি দেওয়া নরম পানীয় খেলে চলবে না।

    ২. কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট রয়েছে এমন খাবার যেমন ওট্‌স, কিনোয়া, ফল, মিষ্টি আলুর মতো খাবার খেতে পারলে ভাল।

    ৩. পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন খেতে হবে। এই প্রোটিন কিন্তু রক্তে ইনসুলিন ‘সেনসিটিভিটি’ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

    ৪. ম্যাগনেশিয়াম-যুক্ত খাবার, যেমন বাদাম, শাক-সব্জি, বিভিন্ন রকমের বীজ খেলেও রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা রুখে দেওয়া যেতে পারে।

    ৫. এক বারে অনেকটা খাবার না খেয়ে, সারা দিন ধরে অল্প অল্প করে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

মন খারাপ হলেই মিষ্টি খেতে মন চায়?

প্রকাশিত সময় : ১০:৪৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪
  • বেশীরভাগ মানুষেরই মন খারাপ হলে মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বেড়ে যায় দ্বিগুণ
  • বেশি মিষ্টি খেলেও কিন্তু অবসাদ, উদ্বেগ বেড়ে যেতে পারে বলছেন চিকিৎসকরা
  • আমাদের আবেগের সঙ্গে খাবারের নিবির যোগ রয়েছে। অনেক সময় মন খারাপ হলে বা অবসন্ন বোধে নির্দিষ্ট কিছু খেতে মন চায় আবার অনেক সময় কিছু খেলে মন খারাপ ধুয়ে মুছে যায়।

    আমাদের প্রায়ই মিষ্টি খাবার খাওয়ার তাগিদ দেখা দেয়। চকলেট, কেক, পেস্ট্রি দেখলেই খেতে মন চায়। বিশেষ করে বেশীরভাগ মানুষেরই মন খারাপ হলে মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বেড়ে যায় দ্বিগুণ।

    কেন এমন হয়? আর আসলেই কি মন খারাপ থাকলে কি মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে?

    মন খারাপ হলেই মিষ্টি খেতে মন চায়?

    গবেষণা ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “এই ধরনের উপসর্গকে ‘কার্বোহাইড্রেট ক্রেভিং’ বলা হয়।

    সাধারণত মন খারাপ বা ডিপ্রেশনের অনেকগুলি স্তর আছে। এই উপসর্গ অ্যাটিপিক্যাল ডিপ্রেশনের। এই ধরনের ডিপ্রেশনের কোনও কারণ থাকে না। এমনি এমনিই মন খারাপ করে। তখনই মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।

    তবে, শুধু একাকিত্ব বা মন খারাপ থেকে মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে, এ কথা ঠিক নয়। উদ্বেগবোধ বাড়লেও এই ধরনের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

    মনোবিদদের তথ্যমতে, “অনেক সময় অনলাইন গেম, ধূমপানের মতো মিষ্টি খাওয়াটাও এক প্রকার নেশার মত হয়ে দাঁড়ায়। শুধু বড়দেরই নয়, এই সমস্যা হতে পারে ছোটদেরও।

    তাই এ ধরনের সমস্যা হলে মনোবিদরা মিষ্টি জাতীয় খাবার কম খেতে পরামর্শ দেন। শারীরিক ব্যায়াম বৃদ্ধির পাশাপাশি শিশুদের বাড়ির বাইরে গিয়ে খেলাধুলো করতে বলা হয়।

    মিষ্টি বেশি খেলে যা হয়

    মন খারাপ থাকলে যেমন মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে, তেমনই বেশি মিষ্টি খেলেও কিন্তু অবসাদ, উদ্বেগ বেড়ে যেতে পারে।

    এ ছাড়াও বেশি মিষ্টি স্বাস্থ্যের জন্য নানাভাবে ক্ষতিকর হতে পারে। সবচেয়ে বড় বিপদ হল রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া। সময়মতো নিয়ন্ত্রণ না করা হলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়তে পারে। এর পাশাপাশি, স্থূলতা, হৃদরোগ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাও বেড়ে যায়।

    আর তাই মন খারাপ হলেই মিষ্টি খাওয়া বাদ দিতে হবে। এক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য এবং ডায়েট— একসঙ্গে এই দুই বিষয়ের উপর নজর দিতে হবে।

    মিষ্টি খাবারের প্রতি আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করবেন কীভাবে?

    ১. শরীরে পানির অভাব হতে দেওয়া যাবে না। পুষ্টিবিদদের মতে, অনেক সময়ে ডিহাইড্রেশন থেকেও মিষ্টি খাবার খাওয়ার ঝোঁক বেড়ে যেতে পারে। তবে, কৃত্রিম মিষ্টি দেওয়া নরম পানীয় খেলে চলবে না।

    ২. কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট রয়েছে এমন খাবার যেমন ওট্‌স, কিনোয়া, ফল, মিষ্টি আলুর মতো খাবার খেতে পারলে ভাল।

    ৩. পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন খেতে হবে। এই প্রোটিন কিন্তু রক্তে ইনসুলিন ‘সেনসিটিভিটি’ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

    ৪. ম্যাগনেশিয়াম-যুক্ত খাবার, যেমন বাদাম, শাক-সব্জি, বিভিন্ন রকমের বীজ খেলেও রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা রুখে দেওয়া যেতে পারে।

    ৫. এক বারে অনেকটা খাবার না খেয়ে, সারা দিন ধরে অল্প অল্প করে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।