বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আপনার সঙ্গী কি ওথেলো সিনড্রোমে ভুগছে?

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হবে বিশ্বাসের। কিন্তু সঙ্গী যদি প্রতিটি বিষয়ে আপনাকে সন্দেহ করে, ঘরে ফিরলে নানান প্রশ্নে জর্জরিত করে ফেলে, সবসময় নজরদারিতে রাখে, এমনকি আপনার ফোন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি চালায় তবে কেমন হবে? বর্তমানে এই সমস্যায় অনেকেই ভুগছেন। আপনি জানেন কী সঙ্গীর এই সন্দেহ যখন মানসিক রোগে রূপ নেয় সেটাকে বলা হয় ওথেলো সিনড্রোম। এই রোগে আক্রান্ত রোগী সবসময় মনে করে, সঙ্গী তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করছে।

ওথেলো সিনড্রোমের নামকরণ করা হয়েছে উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের বিখ্যাত ট্রাজেডি নাটক ওথেলো থেকে। যেখানে অন্যের প্ররোচনায় নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র ওথেলো তার স্ত্রী ডেসডিমোনাকে অবিশ্বাস করতে শুরু করে। সন্দেহের জেরে এক পর্যায়ে স্ত্রীকে নিজ হাতে খুন করে সে। কিন্তু পড়ে নিজের ভুল বুঝতে পারলেও অনেক দেরি হয়ে গেছে ততোক্ষণে।

শেক্সপিয়ারের ওথেলো কাল্পনিক হলেও বাস্তবে এই সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই। শুধু সন্দেহই নয় এই এ রোগে আক্রান্ত রোগী হতে পারে আত্মঘাতী। তাই ওথেলো সিনড্রোমের লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

ওথেলো সিনড্রোমের লক্ষণ 

ওথেলো সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তি অস্বাভাবিক আচরণ করেন। সঙ্গীর প্রতি কারণে-অকারণে সন্দেহ করেন। সবসময় সঙ্গীর ওপর নজরদারি করেন, তাঁর চলাফেরা সীমিত করে ফেলেন।

সঙ্গীর ব্যক্তিগত জিনিসপত্র যেমন মোবাইল, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর অনুপস্থিতিতে নজরদারি করা, অন্য কারো সঙ্গে কথা বলতে না দেওয়া, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া এই রোগের লক্ষণ। কোন প্রমাণ ছাড়াই সবসময় মনে করা সঙ্গী প্রতারণা করছে, সঙ্গীর নির্দোষ আচরণকেও প্রতারণার লক্ষণ হিসেবে মনে করা।

চিকিৎসা

ওথেলো সিনড্রোম একটি মানসিক সমস্যা। এতে আক্রান্তদের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হয়। এতে সাধারণত চিকিৎসক ওষুধ ও থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। উভয় সম্মতি দিলে তাদের একসঙ্গে কাউন্সেলিং করেন মনরোগ চিকিৎসক। যেহেতু সমস্যাটি সম্পূর্ণ মনস্তাত্ত্বিক এবং এর পরিণতি সবসময় নেতিবাচক, সেক্ষেত্রে লক্ষণ প্রকাশ পেলে বিলম্ব করা উচিত নয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি নিজের সমস্যা নিজে বুঝতে পারেন না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপনার সঙ্গী কি ওথেলো সিনড্রোমে ভুগছে?

প্রকাশিত সময় : ০৫:৩৫:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হবে বিশ্বাসের। কিন্তু সঙ্গী যদি প্রতিটি বিষয়ে আপনাকে সন্দেহ করে, ঘরে ফিরলে নানান প্রশ্নে জর্জরিত করে ফেলে, সবসময় নজরদারিতে রাখে, এমনকি আপনার ফোন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি চালায় তবে কেমন হবে? বর্তমানে এই সমস্যায় অনেকেই ভুগছেন। আপনি জানেন কী সঙ্গীর এই সন্দেহ যখন মানসিক রোগে রূপ নেয় সেটাকে বলা হয় ওথেলো সিনড্রোম। এই রোগে আক্রান্ত রোগী সবসময় মনে করে, সঙ্গী তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করছে।

ওথেলো সিনড্রোমের নামকরণ করা হয়েছে উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের বিখ্যাত ট্রাজেডি নাটক ওথেলো থেকে। যেখানে অন্যের প্ররোচনায় নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র ওথেলো তার স্ত্রী ডেসডিমোনাকে অবিশ্বাস করতে শুরু করে। সন্দেহের জেরে এক পর্যায়ে স্ত্রীকে নিজ হাতে খুন করে সে। কিন্তু পড়ে নিজের ভুল বুঝতে পারলেও অনেক দেরি হয়ে গেছে ততোক্ষণে।

শেক্সপিয়ারের ওথেলো কাল্পনিক হলেও বাস্তবে এই সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই। শুধু সন্দেহই নয় এই এ রোগে আক্রান্ত রোগী হতে পারে আত্মঘাতী। তাই ওথেলো সিনড্রোমের লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

ওথেলো সিনড্রোমের লক্ষণ 

ওথেলো সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তি অস্বাভাবিক আচরণ করেন। সঙ্গীর প্রতি কারণে-অকারণে সন্দেহ করেন। সবসময় সঙ্গীর ওপর নজরদারি করেন, তাঁর চলাফেরা সীমিত করে ফেলেন।

সঙ্গীর ব্যক্তিগত জিনিসপত্র যেমন মোবাইল, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর অনুপস্থিতিতে নজরদারি করা, অন্য কারো সঙ্গে কথা বলতে না দেওয়া, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া এই রোগের লক্ষণ। কোন প্রমাণ ছাড়াই সবসময় মনে করা সঙ্গী প্রতারণা করছে, সঙ্গীর নির্দোষ আচরণকেও প্রতারণার লক্ষণ হিসেবে মনে করা।

চিকিৎসা

ওথেলো সিনড্রোম একটি মানসিক সমস্যা। এতে আক্রান্তদের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হয়। এতে সাধারণত চিকিৎসক ওষুধ ও থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। উভয় সম্মতি দিলে তাদের একসঙ্গে কাউন্সেলিং করেন মনরোগ চিকিৎসক। যেহেতু সমস্যাটি সম্পূর্ণ মনস্তাত্ত্বিক এবং এর পরিণতি সবসময় নেতিবাচক, সেক্ষেত্রে লক্ষণ প্রকাশ পেলে বিলম্ব করা উচিত নয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি নিজের সমস্যা নিজে বুঝতে পারেন না।