বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাতজ্বর হলে কী করবেন

বাতজ্বরের জন্য মূলত স্ট্রেপ্টোকক্কাস নামক ব্যাকটেরিয়া দায়ী। বাতজ্বর সাধারণত নিজ থেকেই ভালো হয়ে যায় এবং রোগী সুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু বাতজ্বরের মাধ্যমে হার্ট আক্রান্ত হলে রোগীর মৃত্যু ঝুঁকি আছে বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা।  হার্ট আক্রান্ত হলে এই রোগ হার্টের ভালভগুলো ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়। হার্টের সমস্যা বেড়ে রোগী শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করেন।

ডা. মো হাসানুর রহমান, অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর, এমবিবিএস, ডি-কার্ড, এমডি (কার্ডিওলজি) বলেন, ‘রোগীর পায়ে ব্যথা, হাতে ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা এবং গলা ব্যথা হলে আমরা অনেক সময় বাতজ্বর বলে চিকিৎসা করে থাকি। কিন্তু কোনো রোগীর গলা ব্যথা বা হাত পা ফুলে যাওয়াই বাতজ্বরের একমাত্র লক্ষণ না। অনেক কারণ আছে যেগুলোর কারণে হাত পা ফুলে যেতে পারে।’

বাতজ্বর আছে কি না, তা নিশ্চিত হয়ে এই রোগের চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। কারণ এ রোগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি।

‘বাতজ্বর সাধারণত ৫ বছর বয়স থেকে ৪০ বছর বয়সীদের হয়ে থাকে। স্ট্রেপ্টোকক্কাস নামক ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করলে শুরুতে গলা ব্যথা হয়। এরপর এই ব্যাকটেরিয়ার বিপরীতে শরীরের ভেতরে এক ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এই অ্যান্টিবডিগুলো হার্টের বিভিন্ন অংশে এবং শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে জমা হয়। জমা হয়ে ওই অ্যান্টিবডিগুলো হার্টের ভালভ থেকে শুরু করে পায়ের লিগামেন্ট এবং ক্যাপসুলগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে এবং ইনফেকশন তৈরি করে। এর মাধ্যমে বাতজ্বর হয়ে থাকে।’ – যোগ করেন ডা. মো হাসানুর রহমান।

ডা. মো. হাসানুর রহমান আরও বলেন, ‘রোগীর প্রথমে গলা ব্যথা হতে পারে। এরপর শরীরের বড় বড় জয়েন্টগুলোতে ব্যথা হবে এবং ফুলে উঠবে। রোগী অসহনীয় পর্যায়ের ব্যথা অনুভব করতে পারেন। এ ছাড়া রোগী অস্বাভাবিক আচরণ করতে পারেন। রোগী জ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন। রোগীর হার্ট যদি কোনো কারণে আক্রান্ত হয় তাহলে হার্ট বড় হয়ে যেতে পারে। হার্টের মধ্যে ছিদ্র হতে পারে। এবং ভালবে সমস্যা দেখা দিতে পারে। হার্ট এবং ভালব আক্রান্ত হলে রোগীর মৃত্যু ঝুঁকি আছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে বাতজ্বর নিজ থেকেই সেরে যায় এবং রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।’

রোগ নির্ণয় করার পর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত বিভিন্ন ওষুধ খেতে হবে। পাশাপাশি ব্যথা এবং রোগের অন্যান্য উপসর্গ ভালো না হওয়া পর্যন্ত রোগীকে প্রয়োজনে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস পর্যন্ত  পরিপূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বাতজ্বর হলে কী করবেন

প্রকাশিত সময় : ১১:০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

বাতজ্বরের জন্য মূলত স্ট্রেপ্টোকক্কাস নামক ব্যাকটেরিয়া দায়ী। বাতজ্বর সাধারণত নিজ থেকেই ভালো হয়ে যায় এবং রোগী সুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু বাতজ্বরের মাধ্যমে হার্ট আক্রান্ত হলে রোগীর মৃত্যু ঝুঁকি আছে বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা।  হার্ট আক্রান্ত হলে এই রোগ হার্টের ভালভগুলো ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়। হার্টের সমস্যা বেড়ে রোগী শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করেন।

ডা. মো হাসানুর রহমান, অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর, এমবিবিএস, ডি-কার্ড, এমডি (কার্ডিওলজি) বলেন, ‘রোগীর পায়ে ব্যথা, হাতে ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা এবং গলা ব্যথা হলে আমরা অনেক সময় বাতজ্বর বলে চিকিৎসা করে থাকি। কিন্তু কোনো রোগীর গলা ব্যথা বা হাত পা ফুলে যাওয়াই বাতজ্বরের একমাত্র লক্ষণ না। অনেক কারণ আছে যেগুলোর কারণে হাত পা ফুলে যেতে পারে।’

বাতজ্বর আছে কি না, তা নিশ্চিত হয়ে এই রোগের চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। কারণ এ রোগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি।

‘বাতজ্বর সাধারণত ৫ বছর বয়স থেকে ৪০ বছর বয়সীদের হয়ে থাকে। স্ট্রেপ্টোকক্কাস নামক ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করলে শুরুতে গলা ব্যথা হয়। এরপর এই ব্যাকটেরিয়ার বিপরীতে শরীরের ভেতরে এক ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এই অ্যান্টিবডিগুলো হার্টের বিভিন্ন অংশে এবং শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে জমা হয়। জমা হয়ে ওই অ্যান্টিবডিগুলো হার্টের ভালভ থেকে শুরু করে পায়ের লিগামেন্ট এবং ক্যাপসুলগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে এবং ইনফেকশন তৈরি করে। এর মাধ্যমে বাতজ্বর হয়ে থাকে।’ – যোগ করেন ডা. মো হাসানুর রহমান।

ডা. মো. হাসানুর রহমান আরও বলেন, ‘রোগীর প্রথমে গলা ব্যথা হতে পারে। এরপর শরীরের বড় বড় জয়েন্টগুলোতে ব্যথা হবে এবং ফুলে উঠবে। রোগী অসহনীয় পর্যায়ের ব্যথা অনুভব করতে পারেন। এ ছাড়া রোগী অস্বাভাবিক আচরণ করতে পারেন। রোগী জ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন। রোগীর হার্ট যদি কোনো কারণে আক্রান্ত হয় তাহলে হার্ট বড় হয়ে যেতে পারে। হার্টের মধ্যে ছিদ্র হতে পারে। এবং ভালবে সমস্যা দেখা দিতে পারে। হার্ট এবং ভালব আক্রান্ত হলে রোগীর মৃত্যু ঝুঁকি আছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে বাতজ্বর নিজ থেকেই সেরে যায় এবং রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।’

রোগ নির্ণয় করার পর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত বিভিন্ন ওষুধ খেতে হবে। পাশাপাশি ব্যথা এবং রোগের অন্যান্য উপসর্গ ভালো না হওয়া পর্যন্ত রোগীকে প্রয়োজনে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস পর্যন্ত  পরিপূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।