ওজন কমাতে গিয়ে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন এবং শরীরচর্চার কারণে অনেকের ত্বকের জেল্লা ও চুলের ঔজ্জ্বল্য কমে যায়। এই সমস্যায় করণীয় কী? পরামর্শ দিয়েছেন বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার মহুয়া। লিখেছেন ফাতেমা ইয়াসমীন।
ফিটনেসের প্রতি আগ্রহী মানুষের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এখন স্বাস্থ্য অটুট রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চার পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসের প্রতিও সচেতন তারা। যাদের বাড়তি মেদ, তারাও চান খুব তাড়াতাড়ি শরীরের মেদ ঝরে পড়ুক। কিন্তু এটা করতে গিয়ে অলক্ষ্যেই কিছু অসুবিধার সম্মুখিন হন কেউ কেউ। দ্রুত ওজন কমাতে গিয়ে তারা অনেক সময় এমন সব খাবার বাদ দিয়ে দেন যেগুলো চুল ও ত্বকের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। ফলে শরীর থেকে অতিরিক্ত মেদ ঝরলেও চুল ও ত্বক নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে।
এটার সমাধানও আছে। সঠিক উপায়ে ডায়েট করলে শরীর থেকে অতিরিক্ত ফ্যাট ঝরে যাওয়ার পাশাপাশি চুল ও ত্বক ভালো থাকবে। কিন্তু কেউ অতিরিক্ত ডায়েট করে একেবারে কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খেলে তার চুল আর ত্বকের জৌলুস কমে যাবেই। এ জন্য প্রতিদিনের খাবারের প্রতিও নজর রাখতে হবে। ওজন কমাতে ডায়েট করুন, এতে অসুবিধা নেই। কিন্তু সেই ডায়েট যেন শরীরের পুষ্টিমান বজায় রাখে সে ব্যাপারেও খেয়াল রাখা জরুরি। সাধারণত পুষ্টির অভাবেই ত্বক ও চুল জৌলস হারাতে শুরু করে। এ জন্য ওজন কমাতে গিয়ে এমন সব খাবার বাদ দেওয়া যাবে যেগুলোর প্রভাব পড়ে ত্বক ও চুলের ওপর।
যেসব খাবার খাওয়া দরকার
পর্যাপ্ত পরিমাণে আমিষজাতীয় খাবার খান। যেমন—মাংস ও ডিম। আমিষজাতীয় খাবারে প্রোটিন ও বায়োটিন থাকে। এই বায়োটিন থেকে চুলের প্রোটিন ক্যারোটিন তৈরি করে চুল লম্বা করতে সাহায্য করে। এ জন্য ওজন ঝরানোর সময় আমিষজাতীয় খাবার খান। ওজন কমানোর প্রভাব চুলের ওপর পড়বে না।
তৈলাক্ত মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩, ওমেগা ৬, ফ্যাটি এসিড ও ভিটামিন ‘ই’ থাকে, যা চুলের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে। এ জন্য ওজন ঝরানোর সময়ে কই, শিং, মাগুর জাতীয় মাছ বেশি করে খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ভিটামিন ‘এ’ এবং বিটা-ক্যারোটিনসমৃদ্ধ খাবার খান; এসব খাবার সিবাম তৈরিতে সাহায্য করে। এই সিবাম চুলের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। মিষ্টি আলু, পালংশাকের মতো খাবার থেকে এমন পুষ্টি পাওয়া যায়।
ত্বক ভালো রাখতে ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় খাবার খাওয়া জরুরি। ভিটামিন ত্বক ও চুলের স্টেনডেন ধরে রাখার সহকারী কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে। বাদাম ও বিচি জাতীয় খাবার, সয়াবিন বীজ অর্থাত্ ভিটামিন ‘বি’, ‘ই’, জিংক, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং বিশেষ করে স্পারমিডিন আছে, যা চুল লম্বা করে।
প্রতিদিন খাবারের তালিকায় শাকসবজি বা ফলমূল রাখুন। একই সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। শসা, গাজর, বিট, কাঁচা মরিচ, লেবু, টমেটো দিয়ে জুস করে খেতে পারেন। এতে শরীরের বাড়তি মেদ কমানোর প্রভাব কাটতে সাহায্য করবে। এসব সবজির জুসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও আয়রন থাকে, যা ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে কাজ করে। নারকেল তেল, বাদাম এবং বীজজাতীয় খাবার খান। এগুলো ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সহায়তা করে। এ ছাড়া চুলে ভেষজ তেল ব্যবহার করতে পারেন। ত্বক ও চুলের যত্নে বিভিন্ন প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এতেও ত্বক ও চুলের ক্ষতিকর প্রভাব কমবে।
সূত্রঃ কালের কণ্ঠ

দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম ডেস্ক 
























