বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আসছে শীত, সোরিয়াসিস রোগীদের যা করণীয়

এক ধরনের চর্মরোগ হলো স্কিন সোরিয়াসিস। ত্বক মাত্রাতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে গেলে কিংবা অতিরিক্ত রোদে থাকলে এ সমস্যা দেখা দেয়। সাধারণত দেহের কনুই, হাঁটু, মাথা, হাত ও পায়ের নখে সোরিয়াসিস সমস্যা দেখা দেয়। আক্রান্ত স্থানে গোলাকার ও এবড়োথেবড়ো চাকার মতো দাগ সৃষ্টি হয়। এরপর সেখান থেকে মাছের আঁশের মতো চামড়া উঠতে থাকে। আক্রান্ত স্থানে চুলকানি হয় এবং ত্বক খসখসে হয়ে পড়ে।

শীতকালে স্কিন সোরিয়াসিস সমস্যা বেড়ে যায়। ঠান্ডা আবহাওয়ায় এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা কষ্টকর হয়ে পড়ে। এই শীতে সোরিয়াসিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে মেনে চলুন কিছু নিয়ম। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব নিয়ম মানে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে এই সমস্যাকে।

গরম পানিতে গোসল নয়-

শীতকাল এলেই আমরা গরম পানিতে গোসল করি। এতে ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। ডা. মুড়াসের মতে, গরম পানিতে গোসল করলে ত্বক থেকে নির্গত প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষামূলক তেল চলে যায়। ফলে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে সোরিয়াসিসের সমস্যা বৃদ্ধি করে। এর পাশাপাশি ১৫ মিনিটের অতিরিক্ত সময় ধরেও গোসল করা চলবে না।

তাই, হালকা গরম পানিতে গোসল করুন। আর গোসল শেষে অবশ্যই ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

ঘরের আবহাওয়া রাখুন নিয়ন্ত্রণে-

ঘরের পরিবেশ গরম আর শুষ্ক হলে সোরিয়াসিস বেড়ে যায় এবং চুলকানির সমস্যা তরান্বিত হয়। তাই ঘরের আর্দ্রতা ৩০-৫০ শতাংশের মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন-

করোনার ফলে হাত ধোয়া ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে অনেক বেশি। এতে ত্বক দ্রুত রুক্ষ হয়ে যায় আর সোরিয়াসিসের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই, ত্বকের শুষ্কতা এড়াতে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে এতে যেন কোনো রাসায়নিক, সুগন্ধি বা রঞ্জক না থাকে। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পর যতক্ষণ না ক্রিম ত্বকের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে, ততক্ষণ ম্যাসেজ করুন।

আসছে শীত, সোরিয়াসিস রোগীদের যা করণীয়

নখ দিয়ে আক্রান্ত স্থান চুলকাবেন না (ছবি : সংগৃহীত)

উলের পোশাক পরবেন না-

আপনার যদি সোরিয়াসিস সমস্যা থেকে থাকে তবে উলের পোশাক না পরাই উত্তম। কারণ এ ধরনের পোশাক ত্বকে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে। অতিরিক্ত ভারি পোশাকও পরবেন না। শীত দূর করতে যতখানি গরম পোশাক প্রয়োজন, ঠিক ততখানি গরম পোশাকই পরুন।

সূর্যের আলো গায়ে লাগান-

শীতকালে সোরিয়াসিস সমস্যায় সূর্যালোক দারুণ কাজ করে। সূর্যের আলো ত্বকে লাগানোর এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় ফটোথেরাপি। ডা. মুরাসের মতে, শীতকালে সোরিয়াসিসের খারাপ প্রভাব কাটিয়ে উঠতে ফটৈাথেরাপি দারুণ কাজ করে। এমনকি ওষুধের চেয়েও এটি বেশি কার্যকর।

ঠান্ডা লাগাবেন না-

একে তো করোনা, তার ওপর শীত এলে বেড়ে যায় নানা ফ্লুর আক্রমণ। সব মিলিয়ে এই সময়টায় সোরিয়াসিস রোগীকে একটু সাবধানেই থাকা লাগে। ঠান্ডা লাগাবেন না। নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করুন।

শীতের সময়টায় ত্বক দ্রুত রুক্ষ হয়ে পড়ে। নিষ্প্রাণ ত্বকের নিয়মিত যত্নই পারে ত্বকজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে। তাই, এসময় ত্বকের যত্ন নিন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আসছে শীত, সোরিয়াসিস রোগীদের যা করণীয়

প্রকাশিত সময় : ০১:০৯:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ নভেম্বর ২০২১

এক ধরনের চর্মরোগ হলো স্কিন সোরিয়াসিস। ত্বক মাত্রাতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে গেলে কিংবা অতিরিক্ত রোদে থাকলে এ সমস্যা দেখা দেয়। সাধারণত দেহের কনুই, হাঁটু, মাথা, হাত ও পায়ের নখে সোরিয়াসিস সমস্যা দেখা দেয়। আক্রান্ত স্থানে গোলাকার ও এবড়োথেবড়ো চাকার মতো দাগ সৃষ্টি হয়। এরপর সেখান থেকে মাছের আঁশের মতো চামড়া উঠতে থাকে। আক্রান্ত স্থানে চুলকানি হয় এবং ত্বক খসখসে হয়ে পড়ে।

শীতকালে স্কিন সোরিয়াসিস সমস্যা বেড়ে যায়। ঠান্ডা আবহাওয়ায় এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা কষ্টকর হয়ে পড়ে। এই শীতে সোরিয়াসিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে মেনে চলুন কিছু নিয়ম। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব নিয়ম মানে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে এই সমস্যাকে।

গরম পানিতে গোসল নয়-

শীতকাল এলেই আমরা গরম পানিতে গোসল করি। এতে ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। ডা. মুড়াসের মতে, গরম পানিতে গোসল করলে ত্বক থেকে নির্গত প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষামূলক তেল চলে যায়। ফলে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে সোরিয়াসিসের সমস্যা বৃদ্ধি করে। এর পাশাপাশি ১৫ মিনিটের অতিরিক্ত সময় ধরেও গোসল করা চলবে না।

তাই, হালকা গরম পানিতে গোসল করুন। আর গোসল শেষে অবশ্যই ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

ঘরের আবহাওয়া রাখুন নিয়ন্ত্রণে-

ঘরের পরিবেশ গরম আর শুষ্ক হলে সোরিয়াসিস বেড়ে যায় এবং চুলকানির সমস্যা তরান্বিত হয়। তাই ঘরের আর্দ্রতা ৩০-৫০ শতাংশের মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন-

করোনার ফলে হাত ধোয়া ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে অনেক বেশি। এতে ত্বক দ্রুত রুক্ষ হয়ে যায় আর সোরিয়াসিসের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই, ত্বকের শুষ্কতা এড়াতে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে এতে যেন কোনো রাসায়নিক, সুগন্ধি বা রঞ্জক না থাকে। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পর যতক্ষণ না ক্রিম ত্বকের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে, ততক্ষণ ম্যাসেজ করুন।

আসছে শীত, সোরিয়াসিস রোগীদের যা করণীয়

নখ দিয়ে আক্রান্ত স্থান চুলকাবেন না (ছবি : সংগৃহীত)

উলের পোশাক পরবেন না-

আপনার যদি সোরিয়াসিস সমস্যা থেকে থাকে তবে উলের পোশাক না পরাই উত্তম। কারণ এ ধরনের পোশাক ত্বকে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে। অতিরিক্ত ভারি পোশাকও পরবেন না। শীত দূর করতে যতখানি গরম পোশাক প্রয়োজন, ঠিক ততখানি গরম পোশাকই পরুন।

সূর্যের আলো গায়ে লাগান-

শীতকালে সোরিয়াসিস সমস্যায় সূর্যালোক দারুণ কাজ করে। সূর্যের আলো ত্বকে লাগানোর এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় ফটোথেরাপি। ডা. মুরাসের মতে, শীতকালে সোরিয়াসিসের খারাপ প্রভাব কাটিয়ে উঠতে ফটৈাথেরাপি দারুণ কাজ করে। এমনকি ওষুধের চেয়েও এটি বেশি কার্যকর।

ঠান্ডা লাগাবেন না-

একে তো করোনা, তার ওপর শীত এলে বেড়ে যায় নানা ফ্লুর আক্রমণ। সব মিলিয়ে এই সময়টায় সোরিয়াসিস রোগীকে একটু সাবধানেই থাকা লাগে। ঠান্ডা লাগাবেন না। নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করুন।

শীতের সময়টায় ত্বক দ্রুত রুক্ষ হয়ে পড়ে। নিষ্প্রাণ ত্বকের নিয়মিত যত্নই পারে ত্বকজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে। তাই, এসময় ত্বকের যত্ন নিন।