বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পিরিয়ডের সময় ব্রণের সমস্যা দূর করবেন যেভাবে

  • পিরিয়ডের সময়ে শরীরে হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে ত্বকে ব্রণ দেখা দেয়
  • এ সময়ে পর্যাপ্ত পানি খেলে ত্বক আর্দ্র থাকবে, ফলে ব্রণ, ফুসকুরির সমস্যা হবে না
  • নিয়মিত ত্বকের যত্ন নেওয়া সত্ত্বেও মাসের নির্দিস্ট পিরিয়ডের সময়টাতেই কেন যেন ত্বকের অবস্থা বেশি শোচনীয় হয়ে পড়ে। একেবারে নিয়ম করে অনেকের ত্বক পিরিয়ডের আগে দিয়ে খারাপ হয়ে যায়, ব্রণ উঠে ভরে যায় মুখ।

    পিরিয়ডে ব্রণ কেন হয়?

    কিন্তু কেন এমন হয়? চিকিৎসকদের তথ্যমতে, পিরিয়ডের ঠিক এক বা দুই সপ্তাহ আগে শরীরে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মাত্রা কমে যায়, এর ফলে তেল গ্রন্থিগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তেল উৎপাদন করে। এই অতিরিক্ত তেল মৃত ত্বকের কোষ এবং ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে ত্বকের ছিদ্রগুলোকে আটকে রাখে এবং ব্রণের সৃষ্টি করে।

    আবার পিরিয়ডের ১২-১৩ দিন পর ডিম্বস্ফোটনের সময়ে শরীরে প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়তে থাকে। তখন ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ত্বকে জ্বালা ভাব দেখা দেয়, লালচে র‌্যাশ দেখা দিতে পারে।

    তবে আমাদের শরীরে হরমোনের মাত্রা একেক রকমের হয় এবং তার ওপর নির্ভর করে ত্বকের পরিবর্তন আসে।

    পিরিয়ডসে ব্রণের সমস্যার সমাধান

    ১. পিরিয়ডের সময় ঘনিয়ে এলে ওই সময়টাতে বেশি করে পানি খাওয়া উচিৎ। এ সময়ে পর্যাপ্ত পানি খেলে ত্বক আর্দ্র থাকবে, ফলে ব্রণ, ফুসকুরির সমস্যা হবে না।

    ২. ত্বক তৈলাক্ত হয়ে গিয়েই যেহেতু ব্রণর সমস্যা হয়, তাই ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করা জরুরি। ফেসওয়াশ কেনার সময় দেখে নিন তা অয়েল-ফ্রি ফেসওয়াশ কি না। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

    ৩. অনেকেই ব্রণ খুঁটে ফেলেন। বার বার ব্রণ স্পর্শ করলে ব্রণের জীবাণু ত্বকের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে ব্রণ তো কমেই না, উল্টে বেড়ে যায়।

    ৪. অতিরিক্ত তেলমশলা যুক্ত খাবার খাওয়া উচিৎ না। ভাজাভুজি, নরম পানীয়, চকোলেট, মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি না খাওয়াই ভাল। তার বদলে শাকসবজি ও প্রচুর পরিমাণে মৌসুমি ফল খাওয়া ভালো। এছাড়া এ সময় ফাইবার জাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়া উচিৎ। চিনি কম খান, কফি খাওয়ার মাত্রা কমান। হালকা মেকআপ ব্যবহার করুন।

    ৫. এ সময় ত্বকে অতিরিক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার করাও উচিৎ না। পিরিয়ড শুরু হওয়ার অন্তত সাত দিন আগে থেকে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড দেওয়া ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন দিনে একবার। স্যালিসাইলিক অ্যাসিড দেওয়া ফেস সিরাম ব্যবহার করতেও ভুলবেন না। এটি আপনি সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে ব্রণর সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

    ৬. ডিম্বাশয়ে সিস্ট হচ্ছে কি না তা একবার পরীক্ষা করিয়ে নিন। গালে, থুতনিতে ব্রণর সমস্যা যদি একান্তই না কমে তাহলে চিকিৎসককে দেখান। ঠিকমতো পরীক্ষা করলে বিষয়টি বোঝা যাবে এবং সিস্ট থাকলে চিকিৎসা করতে হবে।৭. নিয়মিত ব্যস্ততা যতই থাকুক, নিয়ম করে শরীরচর্চা করতে হবে। দিনে অন্তত আধ ঘণ্টা সময় রাখতে হবে শরীরচর্চার জন্য। পাশাপাশি, পর্যাপ্ত ঘুমও দরকার। প্রতিদিন টানা ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

পিরিয়ডের সময় ব্রণের সমস্যা দূর করবেন যেভাবে

প্রকাশিত সময় : ০৮:১৭:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪
  • পিরিয়ডের সময়ে শরীরে হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে ত্বকে ব্রণ দেখা দেয়
  • এ সময়ে পর্যাপ্ত পানি খেলে ত্বক আর্দ্র থাকবে, ফলে ব্রণ, ফুসকুরির সমস্যা হবে না
  • নিয়মিত ত্বকের যত্ন নেওয়া সত্ত্বেও মাসের নির্দিস্ট পিরিয়ডের সময়টাতেই কেন যেন ত্বকের অবস্থা বেশি শোচনীয় হয়ে পড়ে। একেবারে নিয়ম করে অনেকের ত্বক পিরিয়ডের আগে দিয়ে খারাপ হয়ে যায়, ব্রণ উঠে ভরে যায় মুখ।

    পিরিয়ডে ব্রণ কেন হয়?

    কিন্তু কেন এমন হয়? চিকিৎসকদের তথ্যমতে, পিরিয়ডের ঠিক এক বা দুই সপ্তাহ আগে শরীরে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মাত্রা কমে যায়, এর ফলে তেল গ্রন্থিগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তেল উৎপাদন করে। এই অতিরিক্ত তেল মৃত ত্বকের কোষ এবং ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে ত্বকের ছিদ্রগুলোকে আটকে রাখে এবং ব্রণের সৃষ্টি করে।

    আবার পিরিয়ডের ১২-১৩ দিন পর ডিম্বস্ফোটনের সময়ে শরীরে প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়তে থাকে। তখন ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ত্বকে জ্বালা ভাব দেখা দেয়, লালচে র‌্যাশ দেখা দিতে পারে।

    তবে আমাদের শরীরে হরমোনের মাত্রা একেক রকমের হয় এবং তার ওপর নির্ভর করে ত্বকের পরিবর্তন আসে।

    পিরিয়ডসে ব্রণের সমস্যার সমাধান

    ১. পিরিয়ডের সময় ঘনিয়ে এলে ওই সময়টাতে বেশি করে পানি খাওয়া উচিৎ। এ সময়ে পর্যাপ্ত পানি খেলে ত্বক আর্দ্র থাকবে, ফলে ব্রণ, ফুসকুরির সমস্যা হবে না।

    ২. ত্বক তৈলাক্ত হয়ে গিয়েই যেহেতু ব্রণর সমস্যা হয়, তাই ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করা জরুরি। ফেসওয়াশ কেনার সময় দেখে নিন তা অয়েল-ফ্রি ফেসওয়াশ কি না। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

    ৩. অনেকেই ব্রণ খুঁটে ফেলেন। বার বার ব্রণ স্পর্শ করলে ব্রণের জীবাণু ত্বকের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে ব্রণ তো কমেই না, উল্টে বেড়ে যায়।

    ৪. অতিরিক্ত তেলমশলা যুক্ত খাবার খাওয়া উচিৎ না। ভাজাভুজি, নরম পানীয়, চকোলেট, মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি না খাওয়াই ভাল। তার বদলে শাকসবজি ও প্রচুর পরিমাণে মৌসুমি ফল খাওয়া ভালো। এছাড়া এ সময় ফাইবার জাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়া উচিৎ। চিনি কম খান, কফি খাওয়ার মাত্রা কমান। হালকা মেকআপ ব্যবহার করুন।

    ৫. এ সময় ত্বকে অতিরিক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার করাও উচিৎ না। পিরিয়ড শুরু হওয়ার অন্তত সাত দিন আগে থেকে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড দেওয়া ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন দিনে একবার। স্যালিসাইলিক অ্যাসিড দেওয়া ফেস সিরাম ব্যবহার করতেও ভুলবেন না। এটি আপনি সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে ব্রণর সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

    ৬. ডিম্বাশয়ে সিস্ট হচ্ছে কি না তা একবার পরীক্ষা করিয়ে নিন। গালে, থুতনিতে ব্রণর সমস্যা যদি একান্তই না কমে তাহলে চিকিৎসককে দেখান। ঠিকমতো পরীক্ষা করলে বিষয়টি বোঝা যাবে এবং সিস্ট থাকলে চিকিৎসা করতে হবে।৭. নিয়মিত ব্যস্ততা যতই থাকুক, নিয়ম করে শরীরচর্চা করতে হবে। দিনে অন্তত আধ ঘণ্টা সময় রাখতে হবে শরীরচর্চার জন্য। পাশাপাশি, পর্যাপ্ত ঘুমও দরকার। প্রতিদিন টানা ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি।