বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে জামিন পেলেন পরী মনি

রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরী মনির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালত এ আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি তাপস পাল জানান, ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। পুলিশ প্রতিবেদন হওয়ার পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়েছে তাকে।

পরী মনির আইনজীবী মজিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আদালত পরী মনির জামিন মঞ্জুর করেছেন। তার মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই। আজকের মধ্যেই তাকে জেল থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করা হবে।

এর আগে দুপুর ২টায় পরী মনির জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়। আদালতে জামিন আবেদনের শুনানি শুরু করে তার আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, আসামিকে তিনবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেল কাস্টডিতে প্রায় ২৪ ঘণ্টার বেশি আটক রাখা হয়। কিন্তু তার কাছ থেকে জিঙ্গাসাবাদে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আমরা বলতে চাই এই আসামি শারীরিকভাবে দুর্বল। তিনি ভারটিগো রোগে আক্রান্ত। জেলে থাকার কারণে তিনি চুক্তিবদ্ধ অনেকগুলো সিনেমা করতে পারছেন না। এছাড়া আসামি একজন নারী ফলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনেই জামিন পেতে পারেন। জামিন পেলে তিনি পলাতক হবেন না। যেকোন শর্তে জামিন দিলে আসামি মেনে নিবেন।

এর বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু আদালতে বলেন, অভিযানে পরী মনির বাসা থেকে সাড়ে ১৮ লিটার মদ পাওয়া যায়। এছাড়া অনেক খালি বোতল পাওয়া যায়। অভিযানের সময় লাইভ করে সময় নষ্ট করে আসামি মদ ঢেলে ফেলে দেন। আরও ৪ গ্রাম ভয়ঙ্কর মাদক আইস পাওয়া যায়। এই মাদকে অনেক আসামি জামিন পাননি। আইন সবার জন্য সমান। তাই আসামিকে কারাগারে আটক রাখা হোক। পরে বিচারক শুনানি শেষে পরী মনির জামিন আবেদনটি মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ২২ আগস্ট তার জামিন শুনানির জন্য আগামি ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। কিন্তু এত দেরিতে শুনানির দিন রাখায় আদেশ চ্যালেঞ্জ করে দ্রুত জামিন শুনানির জন্য উচ্চ আদালতের দারস্থ হন পরী মনির আইনজীবীরা। এরপর ২৬ আগস্ট আসামির জামিন আবেদনের শুনানি এগিয়ে দুই দিনের মধ্যে করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না? তা জানতে চেয়ে রুল দেন হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে রবিবার বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ পরী মনির জামিন শুনানি এগিয়ে ৩১ আগস্ট নতুন দিন ধার্য করেন।

গত ৪ আগস্ট বিকেলে বনানীর বাসায় প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান শেষে পরী মনিসহ তিনজনকে দেশি বিদেশি মদের বোলত ও এলএসডি মাদকসহ আটক করা হয়। পরে বনানী থানায় র‍্যাব বাদী হয়ে পরী মনি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করে।

এ মামলায় প্রথম দফায় ৫ আগস্ট চারদিন এবং ১০ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর ১৩ আগস্ট পরীমনিকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ১৬ আগস্ট তাকে তৃতীয় দফায় ফের পাঁচ দিনের রিমান্ড চান সিআইডি। একই দিনে জামিন আবেদন করা হলেও রিমান্ড আবেদনের জন্য সেটি আইনগতভাবে বাতিল হয়ে যায়। পরে এ রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৯ আগস্ট একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

পরে একদিনের রিমান্ড শেষে ২১ আগস্ট তাকে আদালতে হাজির করা হলে তার জামিন আবেদন না থাকায় পুনরায় কামিমপুর কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। সেদিন জামিন না চাওয়ায় পরী মনি তার আইনজীবীদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর প্রেক্ষিতে পরদিন ২২ আগস্ট তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবীরা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

অবশেষে জামিন পেলেন পরী মনি

প্রকাশিত সময় : ০৪:১৬:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অগাস্ট ২০২১

রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরী মনির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালত এ আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি তাপস পাল জানান, ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। পুলিশ প্রতিবেদন হওয়ার পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়েছে তাকে।

পরী মনির আইনজীবী মজিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আদালত পরী মনির জামিন মঞ্জুর করেছেন। তার মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই। আজকের মধ্যেই তাকে জেল থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করা হবে।

এর আগে দুপুর ২টায় পরী মনির জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়। আদালতে জামিন আবেদনের শুনানি শুরু করে তার আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, আসামিকে তিনবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেল কাস্টডিতে প্রায় ২৪ ঘণ্টার বেশি আটক রাখা হয়। কিন্তু তার কাছ থেকে জিঙ্গাসাবাদে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আমরা বলতে চাই এই আসামি শারীরিকভাবে দুর্বল। তিনি ভারটিগো রোগে আক্রান্ত। জেলে থাকার কারণে তিনি চুক্তিবদ্ধ অনেকগুলো সিনেমা করতে পারছেন না। এছাড়া আসামি একজন নারী ফলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনেই জামিন পেতে পারেন। জামিন পেলে তিনি পলাতক হবেন না। যেকোন শর্তে জামিন দিলে আসামি মেনে নিবেন।

এর বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু আদালতে বলেন, অভিযানে পরী মনির বাসা থেকে সাড়ে ১৮ লিটার মদ পাওয়া যায়। এছাড়া অনেক খালি বোতল পাওয়া যায়। অভিযানের সময় লাইভ করে সময় নষ্ট করে আসামি মদ ঢেলে ফেলে দেন। আরও ৪ গ্রাম ভয়ঙ্কর মাদক আইস পাওয়া যায়। এই মাদকে অনেক আসামি জামিন পাননি। আইন সবার জন্য সমান। তাই আসামিকে কারাগারে আটক রাখা হোক। পরে বিচারক শুনানি শেষে পরী মনির জামিন আবেদনটি মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ২২ আগস্ট তার জামিন শুনানির জন্য আগামি ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। কিন্তু এত দেরিতে শুনানির দিন রাখায় আদেশ চ্যালেঞ্জ করে দ্রুত জামিন শুনানির জন্য উচ্চ আদালতের দারস্থ হন পরী মনির আইনজীবীরা। এরপর ২৬ আগস্ট আসামির জামিন আবেদনের শুনানি এগিয়ে দুই দিনের মধ্যে করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না? তা জানতে চেয়ে রুল দেন হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে রবিবার বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ পরী মনির জামিন শুনানি এগিয়ে ৩১ আগস্ট নতুন দিন ধার্য করেন।

গত ৪ আগস্ট বিকেলে বনানীর বাসায় প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান শেষে পরী মনিসহ তিনজনকে দেশি বিদেশি মদের বোলত ও এলএসডি মাদকসহ আটক করা হয়। পরে বনানী থানায় র‍্যাব বাদী হয়ে পরী মনি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করে।

এ মামলায় প্রথম দফায় ৫ আগস্ট চারদিন এবং ১০ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর ১৩ আগস্ট পরীমনিকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ১৬ আগস্ট তাকে তৃতীয় দফায় ফের পাঁচ দিনের রিমান্ড চান সিআইডি। একই দিনে জামিন আবেদন করা হলেও রিমান্ড আবেদনের জন্য সেটি আইনগতভাবে বাতিল হয়ে যায়। পরে এ রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৯ আগস্ট একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

পরে একদিনের রিমান্ড শেষে ২১ আগস্ট তাকে আদালতে হাজির করা হলে তার জামিন আবেদন না থাকায় পুনরায় কামিমপুর কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। সেদিন জামিন না চাওয়ায় পরী মনি তার আইনজীবীদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর প্রেক্ষিতে পরদিন ২২ আগস্ট তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবীরা।