বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে সমন্বয়ককে মারধর

রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ককে মারপিটের অভিযোগ করা হয়েছে। লাঠিশোঁটা ও রড দিয়ে এলোপাথাড়ি পেটানো হয় তাকে। আহত ওই সমন্বয়ককে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তার নাম নুরুল ইসলাম শহীদ। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অন্যতম সমন্বয়ক। রাবির ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের লেভেল-২ এর দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে। চার বছর ধরে তিনি নগরের ষষ্ঠীতলা এলাকার ‘কিউট ছাত্রাবাস’-এ থাকেন। গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে এই ছাত্রাবাসেই তার ওপর হামলা হয়। ২০ থেকে ২৫ জন ব্যক্তি তাকে মারধর করেছেন বলে জানিয়েছেন সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদ। এ ঘটনার প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। বুধবার দুপুর দেড়টায় রাবির প্যারিস রোডে এ কর্মসূচির আয়োজন করে স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশন। মানববন্ধন থেকে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। আহত সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদ জানান, রাতে তিনি তার কক্ষে বসে ভাত খাচ্ছিলেন। তখন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ছাত্রাবাসে এসে প্রতিটি কক্ষের দরজা ধাক্কা দিয়ে কাউকে খুঁজতে থাকেন। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ছাত্রাবাসে বাইরে থেকে এক ব্যক্তি এসে ঢুকে লুকিয়েছেন। ওই ব্যক্তিকেই খোঁজা হচ্ছে। তিনি বের হয়ে নিজেও খুঁজতে শুরু করেন। এরপর চারতলার রান্নাঘরে শামিম নামের ওই ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। যারা শামিমকে খুঁজতে এসেছিলেন তাদের কাছে তাকে হস্তান্তর করার জন্য তাদেরকে ডাকছিলেন তিনি। এরইমধ্যে ছাত্রাবাসে ঢুকে পড়েন শামিমের পক্ষের ২০-২৫ জন ব্যক্তি। তারা কোনকিছু না শুনেই সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম ও ছাত্রাবাসের মালিক রোকন উদ্দীনকে মারধর শুরু করেন। সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদ জানান, তাকে রড ও লাঠিশোঁটা দিয়ে মারধর করা হয়েছে। বহিরাগত ব্যক্তিরা মারধর করে চলে যাওয়ার পর হাসপাতালে গিয়েছিলেন। রডের আঘাতে হাত ভেঙে গিয়েছে বলে তিনি আশঙ্কা করেছিলেন। তবে এক্স-রে করে দেখেছেন, হাত ভাঙেনি। তাই হাসপাতাল থেকে চলে এসেছেন। এখনও শরীরে প্রচণ্ড ব্যাথা রয়েছে। পরিবার ও বড় ভাইদের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি মামলা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ জানান, হৃদয় ও মোস্তক মিল্টন নামের দুই তরুণের দ্বন্দ্ব আছে প্রেমঘটিত বিষয়ে। রাতে হৃদয় ওই এলাকায় মিল্টনকে ধরে আনে। সেখানে হৃদয়ের দুলাভাই শামিমও আসেন। খবর পেয়ে মিল্টনের লোকজন তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় শামিম গিয়ে ওই ছাত্রাবাসে লুকিয়ে পড়েন। পরে শামিমের লোকজন তাকে উদ্ধারে ছাত্রাবাসে ঢুকে দেখেন, সমন্বয়ক নুরুলের কাছে শামিম। নুরুলই তাকে আটকে রেখেছেন, এই ধারণা করে তাকে মারধর করা হয়েছে। আসলে এটা ভুল বোঝাবুঝি। ওসি আরও বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা সমন্বয়ক নুরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশও গিয়েছিল। নুরুল চাইলে মামলা করতে পারেন। মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে সমন্বয়ককে মারধর

প্রকাশিত সময় : ১০:৩২:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ককে মারপিটের অভিযোগ করা হয়েছে। লাঠিশোঁটা ও রড দিয়ে এলোপাথাড়ি পেটানো হয় তাকে। আহত ওই সমন্বয়ককে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তার নাম নুরুল ইসলাম শহীদ। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অন্যতম সমন্বয়ক। রাবির ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের লেভেল-২ এর দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে। চার বছর ধরে তিনি নগরের ষষ্ঠীতলা এলাকার ‘কিউট ছাত্রাবাস’-এ থাকেন। গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে এই ছাত্রাবাসেই তার ওপর হামলা হয়। ২০ থেকে ২৫ জন ব্যক্তি তাকে মারধর করেছেন বলে জানিয়েছেন সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদ। এ ঘটনার প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। বুধবার দুপুর দেড়টায় রাবির প্যারিস রোডে এ কর্মসূচির আয়োজন করে স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশন। মানববন্ধন থেকে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। আহত সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদ জানান, রাতে তিনি তার কক্ষে বসে ভাত খাচ্ছিলেন। তখন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ছাত্রাবাসে এসে প্রতিটি কক্ষের দরজা ধাক্কা দিয়ে কাউকে খুঁজতে থাকেন। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ছাত্রাবাসে বাইরে থেকে এক ব্যক্তি এসে ঢুকে লুকিয়েছেন। ওই ব্যক্তিকেই খোঁজা হচ্ছে। তিনি বের হয়ে নিজেও খুঁজতে শুরু করেন। এরপর চারতলার রান্নাঘরে শামিম নামের ওই ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। যারা শামিমকে খুঁজতে এসেছিলেন তাদের কাছে তাকে হস্তান্তর করার জন্য তাদেরকে ডাকছিলেন তিনি। এরইমধ্যে ছাত্রাবাসে ঢুকে পড়েন শামিমের পক্ষের ২০-২৫ জন ব্যক্তি। তারা কোনকিছু না শুনেই সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম ও ছাত্রাবাসের মালিক রোকন উদ্দীনকে মারধর শুরু করেন। সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদ জানান, তাকে রড ও লাঠিশোঁটা দিয়ে মারধর করা হয়েছে। বহিরাগত ব্যক্তিরা মারধর করে চলে যাওয়ার পর হাসপাতালে গিয়েছিলেন। রডের আঘাতে হাত ভেঙে গিয়েছে বলে তিনি আশঙ্কা করেছিলেন। তবে এক্স-রে করে দেখেছেন, হাত ভাঙেনি। তাই হাসপাতাল থেকে চলে এসেছেন। এখনও শরীরে প্রচণ্ড ব্যাথা রয়েছে। পরিবার ও বড় ভাইদের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি মামলা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ জানান, হৃদয় ও মোস্তক মিল্টন নামের দুই তরুণের দ্বন্দ্ব আছে প্রেমঘটিত বিষয়ে। রাতে হৃদয় ওই এলাকায় মিল্টনকে ধরে আনে। সেখানে হৃদয়ের দুলাভাই শামিমও আসেন। খবর পেয়ে মিল্টনের লোকজন তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় শামিম গিয়ে ওই ছাত্রাবাসে লুকিয়ে পড়েন। পরে শামিমের লোকজন তাকে উদ্ধারে ছাত্রাবাসে ঢুকে দেখেন, সমন্বয়ক নুরুলের কাছে শামিম। নুরুলই তাকে আটকে রেখেছেন, এই ধারণা করে তাকে মারধর করা হয়েছে। আসলে এটা ভুল বোঝাবুঝি। ওসি আরও বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা সমন্বয়ক নুরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশও গিয়েছিল। নুরুল চাইলে মামলা করতে পারেন। মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’