বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলে বাংলাদেশি নারীসহ নিহত ২

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলের আঘাতে ২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি নারী ও অপরজন রোহিঙ্গা যুবক।আজ সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার তুমব্রু সীমান্তবর্তী জলপাইতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বাংলাদেশির নাম আসমা খাতুন (৫৫)। তিনি তুমব্রু সীমান্তের জলপাইতলী এলাকার বাদশা মিয়ার স্ত্রী। তবে মারা যাওয়া রোহিঙ্গা যুবকের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দিল মোহাম্মদ ভূট্টো বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মিয়ানমারের একটি মর্টালশেল জলপাইতলী এলাকায় এসে পড়ে। এ সময় একজন মহিলা ও একজন রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়েছেন। সীমান্ত এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। লোকজন নিরাপদে এলাক ছেড়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

গত শনিবার ও গতকাল রোববার ব্যাপক গোলাগুলির পর আজ থেকে উখিয়ার পালংখালী এবং টেকনাফে হোয়াইক্যং উলুবনিয়া সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলি শুরু হলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় উলুবনিয়া সীমান্ত থেকে এক রোহিঙ্গা পরিবারকে আটক করেছে বিজিবি।

স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে, স্থল পথে গোলাগুলির সঙ্গে হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া হচ্ছে গুলি। ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্রোহীদের দখল করে নেওয়া অঞ্চল উদ্ধার করতে হামলা চালাচ্ছে সরকারি বাহিনী। সীমান্ত জুড়ে তীব্র গোলাগুলিতে আতংকে ঘরবাড়ি ছেড়েছে স্থানীয়রা।

বেলা ১১টার দিকে মিয়ানমার থেকে উলুবনিয়া সীমান্ত পার হয়ে একটি রোহিঙ্গা পরিবার বাংলাদেশে ঢুকে পড়লে দায়িত্বরত বিজিবির সদস্যরা তাদের আটক রাখেন। স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও তাদের সঙ্গে ৩ শিশুও রয়েছে।

হোয়াইক্যং উলুবনিয়া এলাকার জালাল আহমেদ বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিয়ানমারের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলি এবং বোমার শব্দ আমরা শুনতে পাচ্ছি। ভয়ে সীমান্ত থেকে লোকজন সরে যাচ্ছে। অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছে না।

ঘুমধুম এলাকার আশরাফুল ইসলাম বলেন, গতকাল ব্যাপক গোলাগুলিতে তিনটি গ্রামের লোকজন এলাকা ছাড়া হয়েছে। সকাল থেকে আবারও গোলাগুলি চলছে।

টেকনাফ ২ বিজির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, সীমান্তে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।

এদিকে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষের মধ্যে বাংলাদেশ সীমান্তে আশ্রয় নিয়েছে বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৩৭ সদস্য। আজ বিজিবির সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, এ নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যের সংখ্যা ৯৫ জনে দাঁড়িয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলে বাংলাদেশি নারীসহ নিহত ২

প্রকাশিত সময় : ০৩:৪৯:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলের আঘাতে ২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি নারী ও অপরজন রোহিঙ্গা যুবক।আজ সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার তুমব্রু সীমান্তবর্তী জলপাইতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বাংলাদেশির নাম আসমা খাতুন (৫৫)। তিনি তুমব্রু সীমান্তের জলপাইতলী এলাকার বাদশা মিয়ার স্ত্রী। তবে মারা যাওয়া রোহিঙ্গা যুবকের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দিল মোহাম্মদ ভূট্টো বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মিয়ানমারের একটি মর্টালশেল জলপাইতলী এলাকায় এসে পড়ে। এ সময় একজন মহিলা ও একজন রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়েছেন। সীমান্ত এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। লোকজন নিরাপদে এলাক ছেড়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

গত শনিবার ও গতকাল রোববার ব্যাপক গোলাগুলির পর আজ থেকে উখিয়ার পালংখালী এবং টেকনাফে হোয়াইক্যং উলুবনিয়া সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলি শুরু হলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় উলুবনিয়া সীমান্ত থেকে এক রোহিঙ্গা পরিবারকে আটক করেছে বিজিবি।

স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে, স্থল পথে গোলাগুলির সঙ্গে হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া হচ্ছে গুলি। ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্রোহীদের দখল করে নেওয়া অঞ্চল উদ্ধার করতে হামলা চালাচ্ছে সরকারি বাহিনী। সীমান্ত জুড়ে তীব্র গোলাগুলিতে আতংকে ঘরবাড়ি ছেড়েছে স্থানীয়রা।

বেলা ১১টার দিকে মিয়ানমার থেকে উলুবনিয়া সীমান্ত পার হয়ে একটি রোহিঙ্গা পরিবার বাংলাদেশে ঢুকে পড়লে দায়িত্বরত বিজিবির সদস্যরা তাদের আটক রাখেন। স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও তাদের সঙ্গে ৩ শিশুও রয়েছে।

হোয়াইক্যং উলুবনিয়া এলাকার জালাল আহমেদ বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিয়ানমারের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলি এবং বোমার শব্দ আমরা শুনতে পাচ্ছি। ভয়ে সীমান্ত থেকে লোকজন সরে যাচ্ছে। অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছে না।

ঘুমধুম এলাকার আশরাফুল ইসলাম বলেন, গতকাল ব্যাপক গোলাগুলিতে তিনটি গ্রামের লোকজন এলাকা ছাড়া হয়েছে। সকাল থেকে আবারও গোলাগুলি চলছে।

টেকনাফ ২ বিজির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, সীমান্তে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।

এদিকে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষের মধ্যে বাংলাদেশ সীমান্তে আশ্রয় নিয়েছে বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৩৭ সদস্য। আজ বিজিবির সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, এ নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যের সংখ্যা ৯৫ জনে দাঁড়িয়েছে।