শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কর্মজীবী নারীদের ঘরে থাকার নির্দেশ তালেবানের

তালেবানের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেছেন, আফগানিস্তানে কর্মরত নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ঘরে থাকতে হবে। মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘এটি খুবই স্বল্প সময়ের জন্য একটি প্রক্রিয়া।’ এ খবর বিবিসি বাংলা’র।

২০০১ সালের আগে তালেবান যখন আফগানিস্তান শাসন করতো তখন তারা কঠোর শরীয়া আইন জারি করেছিল। নয় দিন আগে তারা আবারও আফগানিস্তানের পূর্ণ ক্ষমতা নিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সংবাদ সম্মেলনে কাবুল বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে মুজাহিদ বলেন, আফগানদের সেদিকে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত নয়। আর আফগানদের চলে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত বন্ধ করা উচিত আমেরিকার। কারণ আফগানিস্তানে এই প্রতিভাদের প্রয়োজন রয়েছে।

আফগান নারীদের পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, যে কোনও ধরণের বিধিনিষেধ স্বল্পস্থায়ী হবে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর অনেকেরই প্রশিক্ষণ নেই কিভাবে নারীদের সাথে আচরণ করতে হয় বা তাদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়। পূর্ণ নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা নারীদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিচ্ছি।

এদিকে নারীদের অধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশলেট মঙ্গলবার বলেন, তিনি তালেবানদের দ্বারা শিশু সৈনিক নিয়োগ এবং মৃত্যুদণ্ড দেয়ার কথা জানতে পেরেছেন।

তিনি জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় বক্তব্য রাখছিলেন। পরে কাউন্সিল নারী ও মেয়েদের অধিকারের প্রতি ‘অটল অঙ্গীকার’ নিশ্চিত করে একটি প্রস্তাব অনুমোদন করে। কিন্তু অনেক মানবাধিকার গোষ্ঠী আফগানিস্তানে জাতিসংঘের বিশেষ তদন্ত প্রতিনিধি পাঠানোর যে আহ্বান জানিয়েছিল তা শেষমেশ অনুমোদন পায়নি।

তবে, ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তালেবান বেশ সংযত আচরণ করছে এবং তারা নারী ও মেয়েদের অধিকার এবং বাক-স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর দোভাষী হিসেবে কাজ করেছিলেন আফগান নাগরিক খালিদ। তিনি বিবিসিকে স্বস্তির কথা জানিয়ে বলেন, ‘যখন আপনি আপনার দেশ ত্যাগ করেন, আপনার জনগণ, বিশেষ করে আপনার বোন, আপনার ভাই, আপনার মা সবাইকে আপনি ত্যাগ করেন… এইসব কারণে আমি দুঃখিত ছিলাম। কিন্তু এখন আমি যুক্তরাজ্যে ভাল আছি।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

কর্মজীবী নারীদের ঘরে থাকার নির্দেশ তালেবানের

প্রকাশিত সময় : ০৩:৪৯:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অগাস্ট ২০২১

তালেবানের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেছেন, আফগানিস্তানে কর্মরত নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ঘরে থাকতে হবে। মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘এটি খুবই স্বল্প সময়ের জন্য একটি প্রক্রিয়া।’ এ খবর বিবিসি বাংলা’র।

২০০১ সালের আগে তালেবান যখন আফগানিস্তান শাসন করতো তখন তারা কঠোর শরীয়া আইন জারি করেছিল। নয় দিন আগে তারা আবারও আফগানিস্তানের পূর্ণ ক্ষমতা নিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সংবাদ সম্মেলনে কাবুল বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে মুজাহিদ বলেন, আফগানদের সেদিকে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত নয়। আর আফগানদের চলে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত বন্ধ করা উচিত আমেরিকার। কারণ আফগানিস্তানে এই প্রতিভাদের প্রয়োজন রয়েছে।

আফগান নারীদের পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, যে কোনও ধরণের বিধিনিষেধ স্বল্পস্থায়ী হবে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর অনেকেরই প্রশিক্ষণ নেই কিভাবে নারীদের সাথে আচরণ করতে হয় বা তাদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়। পূর্ণ নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা নারীদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিচ্ছি।

এদিকে নারীদের অধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশলেট মঙ্গলবার বলেন, তিনি তালেবানদের দ্বারা শিশু সৈনিক নিয়োগ এবং মৃত্যুদণ্ড দেয়ার কথা জানতে পেরেছেন।

তিনি জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় বক্তব্য রাখছিলেন। পরে কাউন্সিল নারী ও মেয়েদের অধিকারের প্রতি ‘অটল অঙ্গীকার’ নিশ্চিত করে একটি প্রস্তাব অনুমোদন করে। কিন্তু অনেক মানবাধিকার গোষ্ঠী আফগানিস্তানে জাতিসংঘের বিশেষ তদন্ত প্রতিনিধি পাঠানোর যে আহ্বান জানিয়েছিল তা শেষমেশ অনুমোদন পায়নি।

তবে, ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তালেবান বেশ সংযত আচরণ করছে এবং তারা নারী ও মেয়েদের অধিকার এবং বাক-স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর দোভাষী হিসেবে কাজ করেছিলেন আফগান নাগরিক খালিদ। তিনি বিবিসিকে স্বস্তির কথা জানিয়ে বলেন, ‘যখন আপনি আপনার দেশ ত্যাগ করেন, আপনার জনগণ, বিশেষ করে আপনার বোন, আপনার ভাই, আপনার মা সবাইকে আপনি ত্যাগ করেন… এইসব কারণে আমি দুঃখিত ছিলাম। কিন্তু এখন আমি যুক্তরাজ্যে ভাল আছি।’