অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা, কিংবদন্তি গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ রবিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন গীতিকারের পুত্রবধূ শাহানা মির্জা।
তিনি জানান, অসুস্থ অবস্থায় আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তাকে (গাজী মাজহারুল আনোয়ার) রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ডাক্তার দেখে বলেন তার পালস পাওয়া যাচ্ছে না। এর কিছুক্ষণ পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শাহানা মির্জা বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে এসিডিটির সমস্যায় ভুগছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। আমরা গতকালকে তাকে ডাক্তারের কাছেও নিয়ে যাই। রক্ত পরীক্ষা করানো হয়েছিল। আজকে উনার আরও অনেক কিছু পরীক্ষা করার কথা ছিল। কিন্তু আজ সকালে তো তিনি চলে গেলেন।’
স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। মেয়ে দিটি আনোয়ার আমেরিকা থেকে আসার কথা রয়েছে। তিনি আসার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানান তার ভাগনে অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়।
গাজী মাজহারুল আনোয়ারের জন্ম ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩। তিনি একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, রচয়িতা, গীতিকার ও সুরকার। স্বাধীনতা ও দেশপ্রেম নিয়ে তিনি অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান লিখেছেন। তিনি ২০০২ সালে বাংলাদেশের একুশে পদক এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। পাঁচবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে বেতার, টেলিভিশন, সিনেমাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজারের বেশি গান রচনা করেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। বিবিসি বাংলা তৈরিকৃত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানের তালিকায় রয়েছে তার লেখা তিনটি গান।
তার লেখা কিছু কালজয়ী গান হলো-‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’, ‘আছেন আমার মোক্তার, আছেন আমার ব্যারিস্টার’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘ও পাখি তোর যন্ত্রণা’, ‘ইশারায় শীষ দিয়ে’, ‘চোখের নজর এমনি কইরা’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘চলে আমার সাইকেল হাওয়ার বেগে’ প্রভৃতি।