ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র হাইতিতে গ্যাস ট্যাংকার বিস্ফোরণের পর আগুনে পুড়ে ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকালের দিকে দেশটির ক্যাপ-হাইতিয়ান শহরের ঘটা বিস্ফোরণে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা।

ক্যাপ-হাইতিয়ানের ডেপুটি মেয়র প্যাট্রিক আলমোনোর বলেছেন, আমি ঘটনাস্থলে ৬০ থেকে ৬২ জনকে জীবন্ত পুড়ে মৃত্যুবরণ করতে দেখেছি। এখন তাদের শনাক্ত করা পুরোপুরি অসম্ভব।

তিনি আরও বলেন, বিস্ফোরণে ওই এলাকার প্রায় ২০টি বাড়ি পুড়ে গেছে। যদিও এসব বাড়িতে ঠিক কত সংখ্যক মানুষ হতাহত হয়েছেন সে বিষয়ে আমরা এখনো বিস্তারিত কোনো তথ্য জানতে পারিনি।

স্থানীয়রা বলছেন, বিস্ফোরণের পর পার্শ্ববর্তী জাস্টিনিয়েন ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল আগুনে পুড়ে যাওয়া রোগীতে ভরে গেছে। ওই হাসপাতালে আহত লোকজনকে স্থানান্তর করা হচ্ছে। হাসপাতালের একজন নার্স ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, গুরুতর দগ্ধ হয়ে যাওয়া মানুষের চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। আমি ভয় পাচ্ছি, আমরা তাদের সবাইকে বাঁচাতে পারব না।

হাইতির প্রধানমন্ত্রী আরিয়েল হেনরি বলেছেন, বিস্ফোরণে প্রায় ৬২ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং আরও কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। ভয়াবহ এ ঘটনার পর দেশজুড়ে জাতীয় শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

তার মতে, বিস্ফোরণে আহতদের চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে সেখানে ফিল্ড হাসপাতাল মোতায়েন করা হয়েছে। মেয়র প্যাট্রিক আলমোনোরের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী- একটি মোটরসাইকেল ট্যাক্সির সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্যাংকারটি উল্টে যায়।

অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনার পর পথচারী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ট্যাংকারের গ্যাস সংগ্রহ করার জন্য সড়কে আসেন। এ সময় ট্যাংকার বিস্ফোরণে চারদিকে আগুন ছড়িয়ে যায়। আশপাশের বাড়িঘরেও দ্রুত আগুন ধরে যায়। যে কারণে হতাহতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আলমোনোর।

হাইতিতে বর্তমানে তীব্র জ্বালানি সংকট শুরু হয়েছে। দেশটির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে অপরাধী গ্যাংদের কঠোর তৎপরতার কারণে এই সংকট আরও গুরুতর আকার ধারণ করেছে।উল্লেখ্য, সব নাগরিকের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানোর মতো পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ কখনোই উৎপাদন করতে পারেনি ক্যারিবীয় এই দ্বীপ দেশ। এমনকি রাজধানীর অভিজাত এলাকাতেও রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কোম্পানি হাইতি বৈদ্যুতিক ইউটিলিটি দিনে শুধুমাত্র কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে।