দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে মা ও শিশু হাসপাতাল করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের স্বাস্থ্যখাত এগিয়ে চলছে। মা ও শিশু মৃত্যু রোধ করে বিশ্বের কাছে আমরা প্রশংসিত হয়েছি। আগামীতে এই সেবাকে আরও জোরদার করতে প্রতি জেলায় ৩০ থেকে ৫০ শয্যার হাসপাতাল করা হবে।’
আজ রোববার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও শিশু দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসা সেবাকে মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। দেশে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করে প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষদের প্রায় ৩২ রকমের ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণ করছেন। নতুন করে ৫টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ৩৭টি মেডিকেল কলেজ, ২২টি চিকিৎসা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছেন। প্রতিটি জেলায় বেড সংখ্যা দ্বিগুন করেছেন। জেলা হাসপাতালগুলোতে অতি জরুরি ১০টি করে ডায়ালাইসিস সেন্টার করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসাখাতে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ ক্যান্সার, কিডনি, লিভারের চিকিৎসায় মানুষ যাতে নিজ বিভাগেই চিকিৎসা নিতে পারে সেজন্য দেশের ৮ বিভাগে ৮টি উন্নত ও আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ কাজ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। এর পাশাপাশি আমরা এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দেশের মা ও শিশুদের জন্য আলাদা করে সেবা দেবার। দেশের কয়েকশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ইতোমধ্যে প্রসূতি মায়ের জন্য ২৪ ঘন্টা স্বাস্থ্যসেবা দেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
শিশু দিবস উপলক্ষে শিশু শ্রম ও বাল্য বিয়ে বন্ধের আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের অনেক দোকানে, কল-কারখানায় শিশুদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। শিশুদের বয়সে শিশুরা খেলাধুলা করবে, আনন্দ করবে। সেখানে শিশুদেরকে যেভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে তা অমানবিক। বাল্যবিয়ে ঠেকাতে সরকার নানারকম প্রচারণা ও উদ্যোগ নিলেও বাল্যবিয়ে অহরহ ঘটছে। বাল্যবিয়ে মানে একজন অপ্রাপ্ত বয়সের ছেলেমেয়ের বিয়ে। এই বয়সে বিয়ে হলে তারা যেখানে নিজেরাই শিশু থাকে, সেই শিশুদের মধ্যে আরেক শিশুর জন্ম হয়। এতে মা ও শিশুর মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আগামীর বাংলাদেশে সুস্থ-সবল বুদ্ধিমান শিশু হতে হবে। সে পরিকল্পনা নিয়ে আমরা স্বাস্থ্যসেবার কাজ করছি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) লাইন ডিরেক্টর আব্দুল মান্নান, জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ডা. নাসির উদ্দিনসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।