বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনেস্কা। তার মতে রাশিয়ার সেনারা ধর্ষণ আর যৌন নির্যাতনকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে। যুদ্ধকালীন যৌন হিংসা শীর্ষক একটি সেমিনারে লন্ডনে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি। তখনই তিনি এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, রাশিয়ার সেনাদের স্ত্রীরাই তাদের উৎসাহ দিচ্ছেন ইউক্রেনের নারীদের ধর্ষণ করো তোমরা। রুশ সেনাদের হাতে বন্দি বহু ইউক্রেনীয় নারী অন্তঃসত্ত্বাও হয়ে পড়েছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি লন্ডনে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির স্ত্রী ওলেনা জেলেনস্কা। ওই সেমিনারে আলোচ্য বিষয় ছিল ‘যুদ্ধের হাতিয়ার ধর্ষণ’।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের ভ্লাদিমির জেলেনেস্কির স্ত্রীর দাবি, একেবারে খোলাখুলিভাবে ইউক্রেনে যৌন নির্যাতন করছে রাশিয়ার বাহিনী
ওলেনা বলেন, কারও ওপর ক্ষমতা প্রদর্শনের সবচেয়ে বর্বর ও খারাপ পন্থা হচ্ছে ধর্ষণ। যুদ্ধের সময় যারা এ ধরনের হামলার শিকার হন, তারা নিরাপত্তার খাতিরেই মুখ খোলেন না।
রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনে তিনি আরও বলেন, রুশ বাহিনী ইউক্রেনীয় মেয়েদের ধর্ষণ করতে বলছেন তাদের স্ত্রীরাই। যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ধর্ষণকে ব্যবহার করছে তারা। আর এ নিয়ে কোনো রাখঢাকও করছেন না রাশিয়ার সেনারা।
তিনি বলেন, রাশিয়ার ফোর্সের কাছে এটা আর একটি অস্ত্র যেটা তারা এক্ষেত্রে ব্যবহার করছে। তাদের অস্ত্রাগারের এটাও একটা অস্ত্র। সেকারণে তারা একেবারে সিস্টেম অনুসারে আর খোলাখুলি এটা ব্যবহার করছে। তারা এনিয়ে খুব খোলাখুলি। রাশিয়ায় থাকা তাদের আত্মীয়দের সঙ্গে তারা ফোনে এনিয়ে কথা বলছে। আমরা সেটা জানতে পেরেছি।
রাশিয়ার সেনাদের স্ত্রীরা এনিয়ে রীতিমতো উৎসাহ দিচ্ছেন তাদের। তারা বলছে, যাও, ওই ইউক্রেনের নারীদের ধর্ষণ কর, শুধু আমার সঙ্গে ব্যাপারটা শেয়ার করো না, আমাকে বলতে এসো না। তিনি বলেন, এনিয়ে এবার আন্তর্জাতিক দুনিয়ার একটা বক্তব্য থাকা দরকার।
ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার মাস দুয়েক পরেই একটি অডিও ক্লিপ শেয়ার করেছিল ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনী। শিরোনাম ছিল- ‘সিকিউরিটি সার্ভিসে ধরা পড়ল: ইউক্রেনীয় নারীদের ধর্ষণের জন্য তাদের স্বামীদের ছাড়পত্র দিয়েছে রাশিয়ান আক্রমণকারীদের স্ত্রীরা।’ যদিও ৩০ সেকেন্ডের ওই বিস্ফোরক অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করা হয়নি। ১২ এপ্রিল ওই অডিও ক্লিপটি প্রকাশ্যে আনে রেডিও লিবার্টি নামের এক সংস্থা।
প্রসঙ্গত, বুচা শহরের গণহত্যা নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দায় সরব হয়েছে গোটা বিশ্ব। ইউক্রেনের তরফে জানানো হয়েছিল, বহু নারীকেই বুচার বিভিন্ন বাড়িতে বেসমেন্টে আটক করে রেখেছিল রুশ বাহিনী। তাদের মধ্যে অনেকেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। সমর বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজধানী কিয়েভের দখল নিতে না পেরেই নির্বিচারে পাশের শহরগুলোতে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে রুশ সেনা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের স্ত্রীর দাবি, এটা একটি যুদ্ধ অপরাধ। এগুলিকে চিহ্নিত করা দরকার। এই ঘটনায় যারা যুক্ত তাদের দায়ী করা দরকার।